সিরিয়ায় গোপন যুদ্ধে মেতেছে ইরান-ইসরায়েল

সিরিয়ার মাটিতে সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান ও বিমান হামলার তীব্রতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, এসব অভিযান ও হামলার লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে সিরিয়ায় থাকা ইরানি সমরাস্ত্র। এসব সমরাস্ত্রের কিছু অংশের গন্তব্য লেবাননের শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। কিন্তু হিজবুল্লাহর হাতে গিয়ে পড়ার আগেই অভিযান চালিয়ে তেহরানের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে বদ্ধপরিকর ইসরায়েল।

nonameসংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উন্নত মানের। ইসরায়েলের কৌশলগত আধিপত্যের ভিত্তি দুর্বল করে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রয়েছে এগুলোর।

সামরিক বিশ্লেষক এলেক্স ফিশম্যান বলেছেন, ইসরায়েলের এসব হামলার মধ্য দিয়ে সিরীয় ভূখণ্ডে ইরানের বিরুদ্ধে তেল আবিবের ‘গোপন যুদ্ধ’ প্রকাশ হয়ে পড়তে পারে।

ইসরায়েলভিত্তিক দৈনিক পত্রিকা ইয়েদিওথ আহরনোথ-এ এলেক্স ফিশম্যান লিখেছেন, আমাদের এই ধারণাটি ব্যবহার করতে হবে যে ইসরায়েল দৃশ্যত সিরিয়ায় ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক সংঘাতে জড়িয়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা সিরিয়া, লেবানন ও ইরানের বিরুদ্ধে নিজেদের নীতি নিয়ে আলোচনা করেছে। তারা হয়তো যথার্থ উপসংহারে পৌঁছেছে।

২০১৭ সালেই ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো সিরিয়ায় ইরানের সেনা, নৌ ও বিমান ঘাঁটি থাকার সম্ভাবনার ব্যাপারে সরব হয়। শিয়া মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করে তারা।

সামরিক বিশ্লেষক এলেক্স ফিশম্যান বলছেন, ইরানের হুমকি উপেক্ষা করতে পারে না ইসরায়েল। কিন্তু তারা প্রকৃত সামরিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেনি। সিরিয়ান ফ্রন্টের সঙ্গে প্রধান সমস্যা হচ্ছে ভূমি থেকে ভূমিতে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। তাদের নির্ভুল রকেটচালিত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো লেবানন থেকে শুরু করে গোলান মালভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত। এর টার্গেটকৃত পরিধি হচ্ছে পুরো ইসরায়েলি ভূখণ্ড। এমন পরিস্থিতি ইসরায়েলকে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাতেও মিসাইল ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠা করছে ইরান।

এই সমর বিশ্লেষক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া যদি কূটনৈতিক উপায়ে এসব সংকটের সমাধান বের করতে না পারে কিংবা এ ব্যাপারে আগ্রহী না হয় তাহলে ইসরায়েলকেই তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এর কোনও বিকল্প নেই। অস্পষ্ট বিবৃতি বা পরোক্ষ ইঙ্গিত দিয়ে এটি লুকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। যে কোনও বিবেচনায় এটি একটি যুদ্ধ। শত্রু এ সম্পর্কে অবগত। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ইসরায়েলের মানুষকেও এ বিষয়টি বুঝতে হবে। তাদেরও প্রস্তুতি থাকতে হবে।