ট্রাম্পকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে: আফ্রিকান ইউনিয়ন

আফ্রিকার দেশগুলোকে ‘অত্যন্ত নোংরা জায়গা’ বলার ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন। সংস্থাটির ওয়াশিংটন মিশন বলছে, ট্রাম্পের ওই মন্তব্যে তারা ‘মর্মাহত, অপমানিত ও উদ্বিগ্ন’।

ডোনাল্ড ট্রাম্প৫৫ জাতির এই আঞ্চলিক সংস্থা বলছে, বৈচিত্র্য ও মর্যাদার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের যে শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে ট্রাম্পের মন্তব্য তার প্রতি অসম্মানজনক। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তির জন্য অসম্মানের। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই মন্তব্যে আফ্রিকান ইউনিয়ন আহত, অপমানিত ও উদ্বিগ্ন।

এ ঘটনায় দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ বোতসওয়ানায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে অভিবাসন নিয়ে একটি চুক্তির বিষয়ে আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন ট্রাম্প। এ সময় আফ্রিকার দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো অভিবাসীদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা কেন নোংরা দেশগুলো থেকে আসা এই লোকদের থাকতে দিচ্ছি? হাইতির লোক কেন আমাদের এতো বেশি লাগবে? তাদের বের করে দিন।’

বৈঠকে উপস্থিত রিপাবলিকান পার্টির দুই সিনেটর ট্রাম্পের ওই বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তবে বৈঠকে উপস্থিত ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর ডিক ডারবিন জানান, সেখানে বেশ কয়েকবার আফ্রিকার দেশগুলোকে ‘নোংরা জায়গা’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট।

এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের ওই মন্তব্যকে ‘বেদনাদায়ক, লজ্জাজনক ও বর্ণবাদী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জেনেভার জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতর।

জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতরের মুখপাত্র রুপার্ট কলভিল বলেন, আপনি পুরো দেশ বা মহাদেশের সব মানুষকে নোংরা বলতে পারেন না। ট্রাম্পের ওই মন্তব্যকে বর্ণবাদী ছাড়া অন্য কিছু হিসেবে বর্ণনা করা অসম্ভব।

শ্বেতাঙ্গ নয় এমন জনগোষ্ঠীকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত না জানানোর ট্রাম্পের মানসিকতার সমালোচনা করেন জাতিসংঘের এ মানবাধিকার কর্মী।

ওই মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক সমালোচনার প্রেক্ষিতে শুক্রবার টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন ‘কঠিন’ করা নিয়ে আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে তিনি গোপনীয় বৈঠক করছিলেন। তবে ওই বৈঠকে তিনি যেসব শব্দ উল্লেখ করেছেন বলে বলা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে সেগুলো ‘ব্যবহার করা হয়নি’।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা দ্য ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব কালার্ড পিপল অভিযোগ করেছে, ট্রাম্প বর্ণবাদ ও বিদেশি আতঙ্কের গভীর থেকে গভীরে নিমজ্জিত হচ্ছেন।

মার্কিন কংগ্রেসের একমাত্র হাইতিয়ান-আমেরিকান সদস্য, রিপাবলিকান নেতা মিয়া লাভ ট্রাম্পের মন্তব্যকে নির্দয় ও বিভেদজনক হিসেবে আখ্যায়িত করে ট্রাম্পকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা সেড্রিক রিচমন্ড বলেছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য আবারও প্রমাণ করেছে, তিনি আমেরিকাকে মহান নয়; বরং আবারও শ্বেতাঙ্গ করতে চান। সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান।