আফগান কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েকটি তালেবান গোষ্ঠীর আলোচনা শুরু

 



আফগানিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলে বৈঠক করেছেন তালেবান বিদ্রোহীদের ছোট কয়েকটি গ্রুপের নেতারা। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সিকে এই খবর নিশ্চিত করেছেন আফগানিস্তানের এক কর্মকর্তা। আর তুরস্কের মধ্যস্ততায় এই বৈঠক হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ভয়েস অব আমেরিকা।

তালেবানদের বিরুদ্ধে মার্কিন সহায়তায় ১৬ বছর ধরে যুদ্ধ করছে আফগানিস্তান। সংগৃহতি ছবি







৯/১১ হামলার পর ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। আল কায়েদাকে সমর্থন ও আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী ওই যুদ্ধে তালেবানরা ক্ষমতা থেকে উৎখাত হলে মার্কিন সমর্থনে সেখানে নতুন সরকার গঠিত হয়। কয়েক দফা সাধারণ নির্বাচনে সেই ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও ১৬ বছরেও শেষ হয়নি সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধ। পরে বেশ কয়েক দফা শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তালেবানদের তরফ থেকে তাতে সাড়া দেওয়া হয়নি।
আফগানিস্তানের হাই পিস কাউন্সিলের (এইচপিসি) আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইসমাইল কাশিমেয়ার রোববার আনাদোলুকে নিশ্চিত করেছেন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হুমায়ুন জারির এবং আব্বাস বসির তালেবানদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত শনিবার ও রোববার অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে এই বৈঠকে মধ্যস্ততা করেছেন সাবেক মুজাহিদিন নেতা ও বর্তমানে আফগানিস্তানের হেজব-ই-ইসলামি পার্টির নেতা গুলবুদ্দিন হেকমতিয়া। তার সঙ্গে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হুমায়ুন জারির পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৬ সালের জুনে আফগান সরকারের সঙ্গে এক শান্তি চুক্তির পর ২০ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে ২০১৭ সালের জুনে ফিরে এসে মুজাহিদিন নেতা গুলবুদ্দিন হেকমতিয়া প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সরকরকে সমর্থন দেন। ৬৯ বছরের এই নেতা এখন আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে তার দলের সদর দফতরের বাইরে একটি বাড়িতে থাকনে। বেশ কয়েকবার তিনি তালেবান আর সরকারর সঙ্গে আলোচনায় মধ্যস্ততা করেছেন।
হেজব-ই-ইসলামির মুখপাত্র নাদির আফগান জানিয়েছেন, তার দল ইস্তানবুলের এই বৈঠকের আয়োজন করেনি। তবে তিনি জানতেন দলের কয়েকজন প্রতিনিধিরা এই আলোচনায় অংশ নিয়েছে।
আফগানিস্তানের হাই পিস কাউন্সিলের (এইচপিসি) আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইসমাইল কাশিমেয়ার জানিয়েছেন, এই বৈঠকে আনুষ্ঠানিক আলোচনার কৌশল এবং তাতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের নাম ঠিক করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তবে তালেবানদের মুল গ্রুপটির মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এই আলোচনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান তাদের ছেড়ে যাওয়া ছোট ছোট কয়েকটি গ্রুপ যেমন মোল্লা রসুল গ্রুপের নেতারা আফগান সরকারের সঙ্গে ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে থাকতে পারেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজকে হুমায়ুন জারির বলেছেন, তাদের আলোচনা ছিলো অনানুষ্ঠানিক। আর তারা দুই পক্ষের আলোচনার ভিত্তি তৈরি নিয়েই আলোচনা করেছেন। কোয়েটা সুরা, হাক্কানি নেটওয়ার্ক ছাড়াও আরও কয়েকটি ছোট ছোট গ্রুপের তালেবান সদস্যরা এই আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
আলোচনায় অংশ নেওয়া তালেবান প্রতিনিধিদের প্রধান আবদুল রউফ টোলো নিউজকে বলেছেন তুরস্কে অনুষ্ঠিতব্য মূল বৈঠকের জন্য তারা আলোচনা চালিয়ে যাবেন। আর আফগান সরকারও এই বিষয়ে নমনীয়তা দেখিয়েছে।