শীতকালীন অলিম্পিক নিয়ে আলোচনায় উত্তর ও দ. কোরিয়া

শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণ নিয়ে আবারও আলোচনায় বসছে দক্ষিণ কোরিয়া। তবে সোমবারের আলোচনায় অবশ্য গত সপ্তাহের মতো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা থাকছেন না। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।

_99594662_gettyimages-633867318গত সপ্তাহেই উত্তর কোরিয়া জানিয়েছিল যে, তারা দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য শীতকালীন অলিম্পিকে দল পাঠাবে। এবার জানা গেল, উত্তর কোরিয়া তাদের একটি সাংস্কৃতিক দল পাঠাতে পারে।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ দুই কোরিয়ার মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পিয়ংইয়ংয়ের ছোড়া রকেট ও পারমাণবিক পরীক্ষার প্রতিক্রিয়ায় সিউল কেয়াসং শিল্প এলাকার একটি যৌথ অর্থনৈতিক প্রকল্প বাতিল করার পর দুই কোরিয়ার সম্পর্কে অবনতি ঘটে। এর পরপরই উত্তর কোরিয়া দক্ষিণের সঙ্গে টেলিফোনসহ সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও চাপ উপেক্ষা করে পিয়ংইয়ংয়ের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ও পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও দুই কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল।

তবে সম্প্রতি শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণে দেশটির শীর্ষনেতা কিম জং উনের আগ্রহের পর উত্তেজনা খানিকটা কমে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিমের ভাষণের পর দুই কোরিয়ার মধ্যে টেলিফোন হটলাইন ফের চালু হয়, এরপর দক্ষিণের আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া দেয় পিয়ংইয়ং। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার সকালে দুই কোরিয়ার সীমান্ত এলাকার ‘যুদ্ধবিরতি গ্রাম’ পানমুনজমে দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয় আগামী মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাংয়ে হতে যাওয়া শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণের প্রশ্নেই মূলত এ আলোচনার আয়োজন করা হয়।

সোমবারের আলোচনাও আবার সীমান্তবর্তী পানমুনজম গ্রামে শুরু হয়। এই জায়গাটি যুদ্ধবিরতি’ গ্রাম হিসেবেও পরিচিত। দক্ষিণ কোরীয় বার্তা সংস্থা ইয়ুনহাপ জানায়, দুই পক্ষ আলোচনা করছে কয়জন খেলোয়াড় অংশ নেবেন এবং তারা কোন পথে আসবেন।

দুই দেশ থেকে চারজন করে প্রতিনিধির আলোচনায় অংশগ্রহণ করার কথা। উত্তর কোরিয়া প্রতিনিধিদলে থাকছেন দেশটির জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা হিউন সোং ওল।

সোমবারের আলোচনায় অপেক্ষাকৃত কম পদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন। গত সপ্তাহের মতো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দেখা যাবে না।

গত সপ্তাহের আলোচনায় পিয়ংইয়ং জানিয়েছিল, তারা শীতকালীন অলিম্পিকে অ্যাথলেট, চিয়ারলিডার, সাংস্কৃতিক ও একটি তায়কোয়ান্দো দলকে পাঠাতে চেয়েছে।

আগামী ৯-২৫ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়েনচ্যাংয়ে অনুষ্ঠিত হবে এই শীতকালীন অলিম্পিক। আগামী শনিবার সুইজারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির বৈঠকেও আবার আলোচনায় বসবেন তারা।

অলিম্পিকের জন্য মাত্র দুইজন উত্তর কোরীয় অ্যাথলেট কোয়ালিফাই করতে পেরেছেন। এর আগেও উত্তর কোরিয়া কয়েকটি অলিম্পিকে অংশ নেয়। তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে কখনোই খেলেনি তারা। সর্বশেষ ১৯৮৮ সালে সিউলে অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হলে বয়কট করেছিল তারা।

এবার সিউল প্রস্তাব দিয়েছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ায় অ্যাথলেটরা যৌথভাবে মার্চ করবেন। উত্তর কোরিয়াও বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিয়েছে বলে জানা গেছে। নারীদের হকি টুর্নামেন্টে একটি ‘একত্রিত’ কোরিয়া দলেরও প্রস্তাবও দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।  

একত্রীকরণমন্ত্রী ছো মিয়ং-গিয়ন বলেন, উত্তর কোরিয়ার খুব শিগগিরই প্রস্তাবগুলোর সাড়া দেবে।