ট্রাম্পকে একহাত নিলেন হিনা রাব্বানি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একহাত নিলেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার। ট্রাম্পকে টুইটারে আসক্ত উল্লেখ করে তার টুইটকে উপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন এ রাজনীতিক। মার্কিন প্রেসিডেন্টের গণিতজ্ঞান নিয়েও উপহাস করেছেন হিনা রাব্বানি খার। বলেছেন, সামান্য গাণিতিক হিসাব করার জন্য ‘ব্যাপক প্রতিভাবান’ হওয়ার দরকার পড়ে না।

হিনা রাব্বানি খারমার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিনা রাব্বানি বলেন, ‘টুইটারে আসক্ত এই ব্যক্তি (ট্রাম্প) উটকো বিষয় নিয়েই বেশি টুইট করে। মনে হয়, ঘুম থেকে উঠে বিছানার কোন পাশে ছিলেন তাও তিনি টুইট করতে চান।’

পাকিস্তানকে তিন হাজার ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ট্রাম্পের টুইট বার্তার সমালোচনা করেন হিনা রাব্বানি খার। তিনি বলেন, ‘আগের সব টুইটের চেয়ে এই টুইটের পর টুইটকারীকে নিয়ে আমাদের বেশি উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’

পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি হলে টুইটের বদলে টুইটকারীকে নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হতাম। কোনও পরাশক্তি যখন নিজেদের বিদেশ নীতি টুইট করে জানায় তখন তাকে উপেক্ষা করা উচিত।’

হিনা রাব্বানি খার বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) উল্লেখ করেছেন আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তিন হাজার ৩০০ কোটি ডলার নিয়েছি। কিন্তু আসলে ২০০১ সাল থেকে আমরা তাদের কাছ থেকে নিরাপত্তা সহায়তা বাবদ ৪৮০ কোটি ডলার নিয়েছি। আর বেসামরিক সহায়তার জন্য ৫৩০ কোটি ডলার পেয়েছি।’ সামান্য গাণিতিক হিসাব করার জন্য ‘ব্যাপক প্রতিভাবান’ হওয়ার দরকার পড়ে না।

পাকিস্তানকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রত্যাহারে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেন হিনা রাব্বানী খার। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার উপর নির্ভরতা পাকিস্তানের জন্যই ক্ষতিকর। তার ভাষায়, ‘আমার মনে হয় না আমরা এর (মার্কিন সহায়তা) উপর বেশি নির্ভরশীল। পাকিস্তানের গত পাঁচ বছরের পোর্টফোলিওতেও দেখা যাবে তাদের ওপর আমাদের নির্ভরতার বিষয়টি অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়ে থাকে।’

আফগানিস্তানে সোভিয়েত যুদ্ধের সময় পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা দুই দেশই (যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন) সুবিধাজনকভাবে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে গেছে। ক্ষতি বয়ে বেড়াতে হচ্ছে পাকিস্তানকে।

হিনা রাব্বানি খার বলেন, ‘আমাদের দেশে সব মুজাহিদিনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জনগণের মনে সন্ত্রাসী চরমপন্থী মনোভাব ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার আমাদেরকেই তা মোকাবিলা করতে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র খুশি মনে প্রস্থান করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের হাত থেকে আফগানিস্তানকে মুক্ত করার প্রচেষ্টা পাকিস্তানি সমাজে চরমপন্থা ঢুকিয়ে দিয়েছে। এটি আমাদের সমাজের কাঠামোকে চিরদিনের জন্য পরিবর্তন করে ফেলেছে। আফগানিস্তানে বাস্তবতায় আমরা উদাসীন হতে পারি না। তালেবানদের উৎখাতের পর সেখানকার সব জায়গায় যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।’