এইচআরডব্লিউ’র প্রতিবেদন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রশংসা, গুম-খুন নিয়ে উদ্বেগ

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে নিউ ইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।  বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দেওয়া বার্ষিক প্রতিবেদনে এই প্রশংসা করা হয়েছে। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রশংসা করলেও  গোপনে আটক রাখা,গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো বিষয়গুলোতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস। মানবাধিকার সংস্থাটির দাবি, গুরুতর এই অভিযোগগুলো মোকাবিলায় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। দোষীদের সাজার মুখোমুখি না করে উল্টো অভিযোগগুলো অস্বীকার করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে হিউম্যান রাইটস।  পাশাপাশি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ভিন্ন মত বন্ধের সব প্রচেষ্টার অবসানের আহ্বান জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এক রোহিঙ্গা
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ২৮তম সংস্করণের এই প্রতিবেদনটি ৬৪৩ পৃষ্ঠার। ৯০ টিরও বেশি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ওই প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেবার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়। এইচআরডব্লিউর এশিয়া ডিরেক্টর ব্রাড এডামস বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোর করে ফেরত না পাঠানো ও স্বল্প সামর্থ্যের ভেতরেও সামায়িকভাবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ যা করেছে তার জন্য অবশ্যই দেশটি প্রশংসা পেতে পারে।” তবে শরণার্থীদের বসবাসের অযোগ্য দ্বীপে স্থানান্তর অথবা মিয়ানমারে তাদের মৌলিক নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা উদ্বেগজনক বলে মনে করেন তিনি।

প্রতিবেদনে স্থানীয় মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ জোরপূর্বক নিখোঁজের শিকার হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিরোধীদলের সমর্থক ও সন্দেহভাজন জঙ্গি উভয়কেই লক্ষ্যে পরিণত করেছে।

মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে চাপের মধ্যে রয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয় প্রতিবেদনে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিশেষ পরিস্থিতিতে ১৮ বছরের কম বয়স্ক মেয়ের বিয়ের অনুমোদন দিয়ে সরকার যে আইনটি পাস করেছে তা বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে সরকারের আনুষ্ঠানিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। লিঙ্গ ও যৌনতা ভিত্তিক বৈষম্য দূর করতেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করা হয় প্রতিবেদনে।

অ্যাডামস বলেন, ‘গত বছরগুলোতে বাংলাদেশের মানবাধিকার রেকর্ডে উজ্জল কিছু খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। বিশেষ করে যখন দেশটিতে ২০১৯ সালে সাধারণ নির্বাচন হতে চলেছে,তখন দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং ভিন্নমতকে দমনের চেষ্টা বন্ধ করা জরুরি।’