এক রক্ত পরীক্ষায় আট ধরনের ক্যান্সার শনাক্তে সফলতার দাবি

ক্যান্সার শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি সার্বজনীন রক্ত পরীক্ষা পদ্ধতি আবিষ্কারের দাবি করেছেন। তাদের দাবি, এই রক্ত পরীক্ষা দিয়ে যকৃত, ফুসফুস, অগ্ন্যাশয়, স্তন, পাকস্থলী, খাদ্যনালী, মলাশয় ও ওভারিয়ান-এই আট ধরনের ক্যান্সার শনাক্ত করা যায়। বিজ্ঞানীদের আশা, এর মধ্য দিয়ে প্রাথমিক অবস্থায় এবং ছড়িয়ে পড়ার আগেই ক্যান্সার শনাক্ত করা যাবে এবং মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে। গবেষণাধর্মী সাময়িকী ‘সায়েন্স’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ খবরটি জানিয়েছে।   

রক্ত পরীক্ষার প্রতীকী ছবি
এবিসি নিউজের প্রতিবেদেন বলা, যকৃত, ফুসফুস, খাদ্যনালী, অগ্ন্যাশয়, মলাশয়, স্তন ও পাকস্থলীর ক্যান্সারে ভুগছেন এমন এক হাজারেরও বেশি রোগীর ওপর পরীক্ষাটি চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, এই পরীক্ষাটি রক্তে মুক্তভাবে প্রবাহমান পরিবর্তিত ডিএনএ এবং ক্যান্সার সংক্রান্ত প্রোটিনের প্রতি সংবেদনশীল। এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ১ হাজারের বেশি ক্যান্সার রোগীর মধ্যে ৭০ শতাংশের ক্যান্সার শনাক্ত করা গেছে। ক্যান্সার নেই এমন ৮০০ স্বেচ্ছাসেবীর মধ্যেও পরীক্ষাটি চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশেরও বেশি পরীক্ষায় ফলাফল স্বাভাবিক এসেছে।

ক্যান্সার শনাক্তে অভাবনীয় এই রক্ত পরীক্ষা পদ্ধতিটির ব্যবহার আগামী কয়েক বছরের মধ্যে চালু হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে এবিসি। অস্ট্রেলিয়ার ওয়াল্টার এন্ড এলিজা হল ইন্সটিটিউটের গবেষক পিটার গিভসও এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই পরীক্ষাটি একেবারে সংবেদনশীল, সেকারণে এটি বেশিরভাগ ক্যান্সার শনাক্ত করতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ের এই ক্যান্সারগুলো যদি দেরিতে ধরা পড়তো তবে এর ফলাফল মারাত্মক হতো।’

নতুন এই পরীক্ষায় স্তন ক্যান্সারও শনাক্ত করা যাবে
মূলত ৫০ বছরের বেশি বয়সী এবং পরিবারে ক্যান্সারের পূর্ব ইতিহাস থাকা তরুণদের কথা মাথায় রেখে এই পরীক্ষা পদ্ধতি সাজানো হয়েছে। গিভস বলেন, ‘আমাদের যখন বয়স বাড়ে তখন দুর্ভাগ্যজনকভাবে ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ে। আবার কিছু কিছু তরাণ যাদের পরিবারের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব ইতিহাস রয়েছে তারা ক্যান্সারের ঝুঁকি বোধ করতে পারেন এবং আগে থেকেই সতর্ক থাকতে চাইতে পারেন।’
এই পরীক্ষা বছরে একবার শারীরিক পরীক্ষার অংশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন গিভস। তার আশা এর মধ্য দিয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমবে।