কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে বিলাসবহুল একটি বিমান উপহার হিসেবে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প এই উপহার প্রত্যাখ্যান না করার পক্ষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি না নেওয়া হবে বোকামির শামিল। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সোমবার হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, কাতার থেকে এটা একটা দারুণ প্রস্তাব। আমি কৃতজ্ঞ। আমি এমন কোনও ব্যক্তি না যে এ ধরনের একটি প্রস্তাব ফিরিয়ে দেবে। আপনি বলতেই পারেন, ‘না, আমরা একটি অত্যন্ত দামি বিমান বিনামূল্যে চাই না’—সেটা হবে মূর্খতা।
প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের বোয়িং ৭৪৭-৮ বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল এয়ারক্রাফট ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করে সাজানো হবে বলে জানানো হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেন, এটি ভবিষ্যতে তার প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত হবে এবং তিনি অবসরের পর এটি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করবেন না।
কিন্তু এই ঘোষণা সঙ্গে সঙ্গে সমালোচনা ডেকে আনে। বিরোধী ডেমোক্র্যাট নেতারা ও নীতিশুদ্ধ প্রশাসনের পক্ষে থাকা সংগঠনগুলো সতর্ক করে বলেন, এটি প্রেসিডেন্টের নীতিগত স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে এবং বিদেশি প্রভাব বিস্তারের পথ খুলে দিতে পারে।
ডেমোক্র্যাট সিনেটর ব্রায়ান শাটজ, ক্রিস মারফি, কোরি বুকার ও ক্রিস কুনস এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, এ ধরনের উপহার গ্রহণে রাষ্ট্রপতির নীতিগত স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে এবং বিদেশি হস্তক্ষেপের আশঙ্কা বাড়বে।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, বিমানটি প্রতিরক্ষা বিভাগকে উপহার দেওয়ার আইনি প্রক্রিয়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে কাতার এই বিনিময়ে কী চাইতে পারে তা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কোনও উদ্বেগ নেই বলেও জানান তিনি।
ট্রাম্প বলেন, এটি একটি ব্যবহারিক সিদ্ধান্ত। বোয়িং কোম্পানির বিলম্বে আমি হতাশ। আমি প্রথম মেয়াদে নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ানের নির্দেশ দিয়েছিলাম, কিন্তু সেটা এখনও আসেনি।
মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে সৌদি আরব পৌঁছেছেন ট্রাম্প। সফরে তার কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়ার কথা রয়েছে। এসব দেশকে মার্কিন প্রতিরক্ষা সহায়তার ‘কৃতজ্ঞতাবোধ’ থেকেই এই উপহার এসেছে বলে মনে করেন তিনি।