সাউথ এশিয়ান মনিটরের আভাস

যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান বিমানরুট বন্ধ করতে পারে পাকিস্তান

 

 

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানকে দেওয়া অর্থ সহায়তা বন্ধ ঘোষণা করার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের টানাপোড়েন চরমে পৌঁছেছে। এর জের ধরে আফগানিস্তানের বিমানপথ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে পাকিস্তান। এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে এমন আভাস দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সংবাদমাধ্যম সাউথ এশিয়ান মনিটর। এমনটা হলে আফগানিস্তান যুদ্ধে সবচেয়ে বড় অসুবিধার মুখে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র।

air route

খবরে বলা হয়, ২০০১ সালে আফগানিস্তান যুদ্ধ শুরুর পর পাকিস্তানের মাটিতে শত শত ড্রোন হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করার পর যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে মাটিতে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তবে অর্থ সহায়তা বন্ধ করার পর বেকে বসতে পারে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রকে বিপাকে ফেলতে আফগানিস্তানে প্রবেশের বিমানপথ বন্ধ করে দিতে পারে তারা। পদক্ষেপটি আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিতে পারে। বিষয়টি কার্যকর করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তান যুদ্ধেও জড়াতে পারে বলে দাবি করেছে সংবাদমাধ্যমটি।

যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা পাকিস্তানের উপর কতটা নির্ভরশীল এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা বোঝা যাবে। যদিও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না বলে মনে করছেন অধিকাংশ কর্মকর্তা ও পর্যবেক্ষক। পাকিস্তানে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড ওলসন বলেন, ‘এ রকম একটা মনোভাব রয়েছে যে,  সব ভালো কার্ডগুলো আমাদের হাতে। কিন্তু সেটা সত্যি না। পাকিস্তানই বরং সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে এবং পাল্লাটা সেদিকেই ভারি।’

south asian monitor

আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর যুদ্ধ চালাতে হলে অন্যের উপর বেশি নির্ভর করতে হবে। এ কারণেই দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক অ্যালিস ওয়েলস চলতি সপ্তাহে ইসলামাবাদ সফর করেছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, দুই পক্ষই সম্পর্ক জোড়া লাগাতে চায় এ থেকেই বিষয়টি বোঝা যায়।

পাকিস্তান এমন পদক্ষেপ নিলে কী করা যায় তাই ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জিম ম্যাটিস বলেছেন, ‘পাকিস্তান আফগানিস্তানে তাদের সরবরাহ রুট বন্ধ করে দেবে,  এটা তারা মনে করেন না।’ তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এরপরও যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে রসদ সরবরাহের জন্য বিকল্প পথ খুঁজছে।’ ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তান রুট বন্ধ করে দিলেও যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে তাদের বাহিনীর কাছে রসদ পৌঁছাতে পারবে, যদিও এটা খুব কঠিন হবে।’ তবে কোন রুটে আফগানিস্তানে রসদ পৌঁছানো হবে তা বিস্তারিত জানানো হয়নি।

মার্কিন রসদ সরবরাহ বন্ধের ব্যাপারে ভেবেচিন্তে অগ্রসর হচ্ছে পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যাচার ও প্রতারণার অভিযোগ তোলার পর সহায়তা বাতিল করেছে। এরপরই পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রসদ সরবরাহের স্থল ও বিমান পথ বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূত আইজাজ চৌধুরী বলেছেন, ‘এ ধরনের সিদ্ধান্তের কথা পাকিস্তান এই মুহূর্তে ভাবছে না। বরং সন্ত্রাস প্রতিরোধে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছে।’ তবে রাষ্ট্রদূত সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘পাক-মার্কিন সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে গেলে আর পরিস্থিতি তৈরি হলে যে কোনও সিদ্ধান্তই নেওয়া হতে পারে।