আমরা প্রস্তুত, কিন্তু বাংলাদেশ প্রস্তুত নয়: মিয়ানমার

মঙ্গলবার শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনও শুরু হয়নি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। আর এজন্য বাংলাদেশকেই দোষ দিচ্ছে মিয়ানমার। তাদের দাবি, বাংলাদেশ প্রস্তুত না থাকলেও তারা রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

66b616e90fedad40b0e304911707fd07-5a659a290f61bপ্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যকার স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী তা মঙ্গলবার শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় আয়োজন অসম্পূর্ণ থাকায় তা শুরু হচ্ছে না। তবে মিয়ানমারের দাবি, তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে প্রস্তুত।

মঙ্গলবার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা জানান, কোনও রোহিঙ্গাই ফেরত যায়নি। দেশটির আন্তর্জাতিক সহায়তা বিষয়ক মন্ত্রী কিয়াও তিন বলেন, ‘আমরা তাদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত। সমঝোতা অনুযায়ী আমরা সব কাজ সম্পন্ন করেছি।’

তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এখনি তাদের ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না। শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এখনও অনেক কিছু বাকি। যাদেরকে ফেরত পাঠানো হবে সেই তালিকা এখনও প্রস্তুত না। তাদের জন্য যাচাই-বাছাই ও ট্রানজিট ক্যাম্পও এখনও প্রস্তুত হয়নি।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতার পর রোহিঙ্গাদের ওপর নিধনযজ্ঞ জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা ও ধর্ষণ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।  

আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্যও মিয়ানমারকে চাপ দিচ্ছিল বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক বিশ্ব। গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য একটি অ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তিতে সই করেন। এরপর ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয় এবং ১৬ জানুয়ারি ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তি সই হয়।

সর্বশেষ অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুযায়ী দুই দেশের সীমান্তে অস্থায়ী ক্যাম্পে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মঙ্গলবার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে এখনও অনেক কাজ বাকি বলে সেটিও পিছিয়ে যায়।

কিয়াও তিন বলেন, ‘আমরা খবরে দেখলাম বাংলাদেশ এখনও প্রস্তুত না। কিন্তু আমরা এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা পাইনি।’ আর মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক থং তুন বলেন, আমরা আশা করছি, সমঝোতা অনুযায়ীই আজ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

তারা রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করার জন্য সীমান্তে দুটি ক্যাম্পও স্থাপন করেছে বলে জানান কর্মকর্তারা।