জ্যাকব জুমার ভাগ্য নির্ধারণে আজ 'বিশেষ বৈঠক'

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার ভাগ্য নির্ধারণে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস-এএনসির কার্যনির্বাহী পরিষদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় এই পরিষদ প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করার এখতিয়ার রাখে। নতুন দলীয় প্রধান সিরিল রামাফোসাকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, জুমাকে পদত্যাগ করতে বলা হবে কিনা। 

জ্যাকব জুমা
জ্যাকব জুমার মেয়াদ ২০১৯ সালের নির্বাচন পর্যন্ত। তবে তিনি যদি এর মধ্যে পদত্যাগ না করেন তাহলে তার দলের নেতারা তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অপসারণ বা সংসদে আইন পাস করে তাকে পদচ্যুত করতে পারেন। জ্যাকব জুমার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ আছে। দুর্নীতিতে তার নাম জড়িয়ে পড়ে ব্যবসায়ী শাবির শেইকের সাথে। সাবির ফরাসি অস্ত্র বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ২০০৫ সালে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। যুদ্ধবিমান, টহল নৌযান ও অন্যান্য অস্ত্র কেনার সময় প্রেসিডেন্ট জুমা ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা সাবিরের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছিলেন মর্মে অভিযোগ উঠেছিল।

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর জ্যাকব জুমা দলের সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন গত ডিসেম্বরেই। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সিরিল রামাফোসা। বর্তমানে দলের কোন্ও শীর্ষ পদে নেই জুমা। তবে এখন প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার জন্যও জুমার উপর চাপ বাড়ছে। দলের শীর্ষ নেতারা মনে করেন জ্যাকব জুমার বিরুদ্ধে থাকা দুর্নীতির অভিযোগ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে, যা পরবর্তী নির্বাচনে দলের জন্য খারাপ ফল বয়ে আনতে পারে।

এ পরিস্থিতিতে জুমাকে পদত্যাগ করতে বলা হবে কি হবে না এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস-এএনসির কার্যনির্বাহী পরিষদের পক্ষ থেকে সোমবার বৈঠক ডাকা হয়। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সিদ্ধান্তটি নিতে গিয়ে দলীয় নেতারা দুটি পক্ষে ভাগ হয়ে যেতে পারে। এক পক্ষ চাইবে জুমা ক্ষমতায় থাকুক, আর আরেক পক্ষ চাইবে জুমার জায়গায় সিরিল রামাফোসা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করুক।

রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) কেপ টাউনে এক সমাবেশে রামাফোসা বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনা করতে আগামীকাল বৈঠক করবে এএনসি’র জাতীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ। কারণ আমাদের লোকজন এ বিষয়কে চূড়ান্ত করতে চায়। এনইসি সেটা যথার্থভাবে করবে।’ এর আগে বুধবার এএনসি নেতা বলেছিলেন, তিনি এবং জুমা ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে সরাসরি কথা বলেছেন। তবে জুমা এখনও স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দেননি।    

 ২০০৫ সালে জুমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও ২০০৯ সালে তা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু গত বছরে বিরোধীদল ‘ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের’ দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে আদালত জ্যাকব জুমার বিরুদ্ধে আবার অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। আদালতে আপিল করলেও শেষ রক্ষা হয়নি জুমার। আদালত সে আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।