সংবিধান সংশোধনে জাতিসংঘ সমর্থিত কমিটি গঠনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সিরিয়ার

সংবিধান সংশোধনে জাতিসংঘের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে সিরিয়ার সরকার। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী দামেস্কে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের কথা জানান সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এক সহকারী আয়মান সুসান। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত সিরিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপগুলোর একটি শান্তি আলোচনায় ওই প্রস্তাবের কথা উঠে এসেছিল।

সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহকারী আয়মান সুসান

রাশিয়াতে অনুষ্ঠিত ‘সিরিয়ান কংগ্রেস অফ ন্যাশনাল ডায়লগ’(সোচি) সম্মেলনের প্রস্তাব ছিল আসাদ সরকার ও আসাদ বিরোধীদের নিয়ে একটি কমিশন গঠন করা হোক যাতে তারা একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে পারে।

তবে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে আয়মান সুসান বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আমরা কারও কথা মানতে বাধ্য নই। আর সিরিয়া গঠন করেনি বা নেতৃত্ব দিচ্ছে না এমন কোনও কমিটির সাথে সিরিয়ার কোন সম্পর্ক নেই। নাম বা কাজ যা-ই হোক না কেন, কোন বিদেশি পক্ষের কোনও কিছু মানতে সিরিয়া বাধ্য নয়। তারা যা-ই বলুক সেটা আমাদের ভাববার বিষয় নয়।’

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের মিত্র রাশিয়ারই একটি প্রচেষ্টার ফলাফল ছিল সোচি সম্মেলন। দেশটিতে আট বছর ধরে চলা সংঘাত নিরসন করে শান্তি আলোচনা শুরু করতেই এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছিল। গত ৩০ জানুয়ারি ওই সম্মেলন শেষে সিরিয়াতে একটি সংবিধান সংশোধন কমিটি গঠন ও একটি সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য জেনেভাতে জাতিসংঘের একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিরিয়ার বিরোধী গ্রুপ সিরিয়ান নেগোসিয়েশন কমিশন (এসএনএ) সোচি সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। তাদের অভিযোগ ছিল, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদ ও তার সমর্থক রাশিয়ার সামরিক শক্তির ওপর নির্ভর করেই চলতে চাইছে। তাদের সমঝোতার সত্যিকারের কোনও ইচ্ছা নেই।’ এসএনএ অবশ্য পরে সংবিধান সংশোধনের আলোচনায় থাকতে রাজী হয় এই শর্তে যে আলোচনা হতে হবে জাতিসংঘের নেতৃত্বে।

ওই কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জাতিসংঘের সিরিয়া বিষয়ক দূত স্টাফান ডি মিসতুরাকে।  সোচি সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, তিনি নিজেই এই কমিটির সদস্য হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণ করবেন এবং সেই অনুযায়ী সরকার সমর্থক, বিরোধী পক্ষ ও সমাজের নিরপেক্ষ অংশ থেকে ৫০ জনকে বেছে নিয়ে একটি কমিটি বানাবেন।

সোচি সম্মেলনের পর সিরিয়া সরকার সংবিধান সংশোধন ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করে সোচি সম্মেলনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে সিরিয়া এখন বলছে, ‘ডি মিসতুরা আলোচনার সঞ্চালক মাত্র; তিনি মধ্যস্ততাকারী বা অপর পক্ষগুলোর প্রতিনিধি নন।’

জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনায় সিরিয়ার সংঘাত নিরসনে এ পর্যন্ত ৯ বার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর বেশিরভাগই অনুষ্ঠিত হয়েছে জেনেভায়।  তবুও সাত বছর ধরে বিবাদমান সিরিয়ার বিভিন্ন পক্ষগুলোর ভেতরে তারা কোন সমঝোতা করিয়ে দিতে পারেনি।