বিশ্বে যুদ্ধের কবলে প্রতি ছয়জনে একজন শিশু

বিশ্বের সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোতে বসবাসরত শিশুরা গত ২০ বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশ্বে এখন প্রতি ছয়জন শিশুর একজনকে যুদ্ধকবলিত অঞ্চলে বসবাস করতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের এক প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে সিরিয়া, আফগানিস্তান এবং সোমালিয়াকে শিশুদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সিরিয়ায় বিমান হামলার একটি এলাকায় এক শিশুকে উদ্ধার করছেন সিভিল ডিফেন্সের এক সদস্য
সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৫ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি শিশু সংঘাতকবলিত এলাকায় বসবাস করে; যা ১৯৯৫ সালের চেয়ে ৭৫ শতাংশ বেশি। ১৯৯৫ সালে এ সংখ্যা ছিল ২০ কোটি। মধ্যপ্রাচ্যের শিশুদেরকে সবচেয়ে বেশি সংঘাতপূর্ণ এলাকায় থাকতে হয়। সেখানে প্রতি ৫ জনে ২ জন শিশু যুদ্ধ এলাকার ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে। আফ্রিকাকে এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে রাখা হয়েছে। সেখানে প্রতি ৫ জনে একজন শিশু যুদ্ধ এলাকায় থাকে। ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটিকে ‘তুমুল’ সংঘাতপূর্ণ এলাকার শিশু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘চরম সহিংসতা’ হিসেবে জাতিসংঘ যে ছয়টি ঝুঁকির কথা চিহ্নিত করেছে তার সবগুলো ঝুঁকিতেই রয়েছে এসব শিশু। ওই ছয়টি ঝুঁকি হলো: হত্যা ও অঙ্গচ্ছেদ করা, যুদ্ধে শিশুর নিয়োগ ও ব্যবহার, যৌন নিপীড়ন, অপহরণ, স্কুল ও হাসপাতালে হামলা, মানবিক সহায়তা সরবরাহে অস্বীকৃতি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, প্রতিবেদনটি তৈরির ক্ষেত্রে সেভ দ্য চিলড্রেন জাতিসংঘ ও অন্যান্য গবেষণামূলক নথি ব্যবহার করেছে। তবে যুদ্ধে শামিল বিভিন্ন পক্ষের রেকর্ডকৃত তথ্যের মধ্যে ‘তুমিুল ব্যবধান’ রয়েছে উল্লেখ করে সমালোচনা করেছে তারা।

সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিকভাবে আইনি মানদণ্ডের উন্নয়ন ঘটলেও তাতে কোনও কাজ হচ্ছে না। বিশ্বজুড়ে শিশুদের বিরুদ্ধে নৃশংস কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব কৌশলের মধ্যে আছে, শিশু যোদ্ধা নিয়োগ এবং শিশুর ওপর যৌন নিপীড়ন। সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, শিশুদের হত্যা ও বিকলাঙ্গ করতে রাসায়নিক অস্ত্র, স্থলমাইন এবং গুচ্ছ বোমার মতো অস্ত্রের ব্যবহার কমেছে; তবে অন্য হুমকিগুলো থেকে গেছে।