নাইজেরিয়ায় ৪৭৫ সন্দেহভাজন বোকো হারাম সদস্যের কারামুক্তি

নাইজেরিয়ায় কারামুক্তি পেল জঙ্গি সংগঠন বোকো হারামের ৪৭৫ জন সন্দেহভাজন সদস্য। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণের অভাব থাকায় রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তাদের মুক্তি দিয়েছে আদালত।  সন্দেহভাজনদের একাংশকে কোনও মামলা ছাড়াই কয়েক বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছিল।  

বোকো হারাম
রবিবার এক বিবৃতিতে নাইজেরিয়ার বিচার বিভাগ জানায়, বোকো হারামের সদস্য কিংবা সংগঠনটির পরিকল্পনা ও আস্তানার তথ্য গোপনকারী সন্দেহে ওই ৪৭৫ সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছিল। এখন  ‘যথাযথ পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে তাদেরকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এরপর তারা পরিবারের কাছে ফিরে যাবে। নাইজেরিয়ার বিচার বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পর্যাপ্ত প্রমাণ না থাকায় প্রসিকিউশন কাউন্সিল তাদেরকে অভিযুক্ত করতে পারেনি। সেকারণে সন্দেহভাজনদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।' 

কাইনজি শহরের আদালতে দ্বিতীয় ধাপে ১৬০০ সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ওই বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়। গত সপ্তাহেও কয়েকটি শুনানি হয়েছে।গত সপ্তাহে কাইনজি আদালতে ২০ বোকো হারাম সদস্যকে দুই থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে চিবুক থেকে ২০০রও বেশি স্কুল শিক্ষার্থীকে অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকা হারুনা ইয়াহিয়াকে দ্বিতীয় ধাপে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর আগেও তাকে ১৫ বছরের সাজা দেওয়া হয়। বিচারপতি জানিয়েছেন, দুটি সাজার মেয়াদ ধারাবাহিকভাবে শেষ করা হবে। 

অক্টোবর থেকে নাইজেরিয়ায় ১৬৯৯ জন সন্দেহভাজন বোকো হারাম সদস্যের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগই পুরুষ। তবে কয়েকজন নারী ও শিশুকেও জেলে রাখা হয়েছে। বিনা বিচারে কয়েক বছর ধরে তাদেরকে আটকে রাখার কারণে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে পড়ে নাইজেরিয়া। 

নাইজেরিয়ায় ২০০৯ সালে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েমের কথা বলে উত্তর পূর্বাঞ্চলে তৎপরতা শুরু করে বোকো হারাম। ২০ লাখ মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। নিহত হয় ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ। নাইজেরীয় প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদু বুহারি সম্প্রতি বলেছেন, বোকো হারামের সহিংসতার যুগের ‘ধীরে ধীরে অবসান’ হতে যাচ্ছে। তবে তারপরও নাইজেরিয়ার উত্তর পূর্বাঞ্চলে হামলা অব্যাহত রেখেছে বোকো হারাম।