অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন

বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনের প্রশংসা, গুমসহ মানবাধিকার হরণের অভিযোগ

যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রশংসা করেছে। তবে গুমসহ বিভিন্ন মানবাধিকার হরণের সমালোচনা করেছে ওই সংস্থা। ১৫৯ দেশের ওপর তৈরি করা সংস্থাটির বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।
noname

সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাখাইন সহিংসতার শিকার ৬ লাখ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এতে জামায়াত নেতাদের গ্রেফতারের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। অভিযোগ তোলা হয়েছে মানবাধিকার কর্মীদের ওপর দমনক্রিয়া চালানোর। স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের আদিবাসী এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সুরক্ষার প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থানের সমালোচনা করা হয়েছে এতে। তবে এক দশকের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দারিদ্র্য দূর করার প্রশংসা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে অভিযোগ তোলা হয়েছে,  বিরোধী দলের সমর্থকদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাংলাদেশে নিয়মিত গুমের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের গুম বিষয়ক পর্যবেক্ষক দলের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষের কাছে লেখা এক বার্তায় বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গুনের ঘটনা অনেক বেড়েছে। গত বছরে ৮০ জনেরও বেশি মানুষকে গুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

এপ্রিলে  সুইডেনের এক বেতারে গোপনে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান কর্মকর্তার  বক্তব্য প্রচার করা হয়েছিল উল্লেখ করে অ্যামনেস্টি তাদের প্রতিবেদনে বলছে, ওই কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন কিভাবে তারা গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করেন। অক্টোবর মাসে গুমের শিকার হওয়া শিক্ষক মোবাশ্বার হাসানের প্রসঙ্গও উঠে আাসে প্রতিবেদনে।

অ্যামনেস্টি বিচারব্যবস্থায় সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছে, বলছে এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তারা বলছে, অসদাচারণ ও অক্ষমতার কারণে বিচারপতিদের সংসদের দ্বারা অপসারিত হওয়ার বিধান প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ খারিজ করে দেওয়ার পর  প্রধান বিচারপতি সিনহা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান। নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতন নিয়ে তেমন কোনও তদন্ত হয় না বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডবিরোধী অবস্থান থেকে অ্যামনেস্টি এপ্রিলে কার্যকর দুই মানবতাবিরোধী অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডেরও সমালোচনরা করেছে।

অ্যামনেস্টির অভিযোগ, সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এবং মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের হেনস্তা করার জন্য নিপীড়নমূলক আইন ব্যবহার করে যাচ্ছে। এছাড়াও সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ব্যবহার করে অনলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা করছে। সাংবাদিক নির্যাতনেরও অভিযোগ তুলেছে অ্যামনেস্টি।  আব্দুল হাকিম শিমুল নামের একজন সাংবাদিককে হত্যা করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বহু সাংবাদিক শারীরিক নিগ্রহের শিকার হয়েছেন।