চীনের সাড়ে ১৪ লাখ কোটি টাকার সামরিক বাজেট

আগামী বছরের জন্য এক লাখ ১১ হাজার কোটি ইউয়ান অর্থাৎ ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের সামরিক বাজেট ঘোষণা করেছে চীন। টাকার অঙ্কে যা ১৪ লাখ ৪৯ হাজার ৪৪৬ কোটিরও বেশি। গত বছরের চেয়ে এবার ৮ শতাংশ বাজেট বাড়ানো হয়েছে। দেশটির চলমান সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং এই বাজেট ঘোষণা করেন। এছাড়া দেশটির সামগ্রিক বাজেটেও সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

চীনের সেনাবাহিনী

চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে (এনপিসি) প্রেসিডেন্টের মেয়াদ দুইবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ধারাটিকে পরিবর্তনের উদ্যোগও নেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিপিং ইচ্ছামতো ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। চীনের অভ্যন্তরেই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হলেও এই পদক্ষেপ শি জিপিংকে দেশটির নেতা মাও সেতুংয়ের মতো ক্ষমতাবান করে তুলবে।

এনপিসি মূলত একটি রাবারস্ট্যাম্প পার্লামেন্ট। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই এর মূল কাজ। পার্লামেন্টের ৩ হাজার সদস্য কৌশলগতভাবে নির্বাচিত হলেও বাস্তবে তা দলেরই ঠিক করা। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে পার্লামেন্টের এই বৈঠকের আয়োজন করা হলেও তার আগে বিরোধীদের বেইজিং থেকে বের করে দেওয়া হয়।  

চীন সরকার বলছে, তাদের এবারের বাজেট তিনটি প্রধান লক্ষ্য মাথায় রেখে ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলো হলো, অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলা করা, ক্রমবর্ধমান দূষণ কমানো ও দরিদ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত রাখা। পার্লামেন্টের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী লি নতুন সামরিক বাজেট ঘোষণা দেন। জাতীয় নিরাপত্তা পরিবেশের গভীর পরিবর্তন মোকাবিলায় সেনাবাহিনীকে ‘পাথরের মতো শক্তিশালী’ করতেই এই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন লি।  

বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেনাবাহিনীর মালিক চীন তার সেনাদের আধুনিকায়ন অব্যাহত রেখেছে। দেশটি দক্ষিণ চীন সাগর ও হিমালয়ের সীমান্ত এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজও করে যাচ্ছে। তাই এই সামরিক বাজেট বৃদ্ধিকে চীনের কৌশলগত লক্ষ্যের জন্য ভাল লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এই পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রসহ চীনের আঞ্চলিক প্রতিপক্ষরা উদ্বিগ্ন হতে পারে।

চীন এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি। বেশ কয়েক বছরের দ্রুত প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে দেশটির লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্য থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছে। দেশটিতে এখন বিশাল সংখ্যক মধ্যবিত্ত শ্রেণি রয়েছে।