স্পেনে কর্মবিরতিতে নারীরা, যোগ দিয়েছেন মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মেয়রও

স্পেনজুড়ে প্রথমবারের মতো ডাকা ‘নারীবাদী ধর্মঘটে’ যোগ দিতে বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) একদিনের কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে স্পেনের নারীরা। বেতনভোগী কিংবা বেতন না পাওয়া সব নারীরাই এ কর্মবিরতি পালন করবেন। লৈঙ্গিক বৈষম্য, পারিবারিক সহিংসতা এবং বেতন বৈষম্য অবসানের দাবিতে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান।

স্প্যানিশ নারী
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর স্পেনে জীবনসঙ্গী কিংবা সাবেক জীবনসঙ্গীর হাতে হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৯ জন নারী। ২০১৬ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪৪। সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে স্পেনে নারীর ওপর সহিংসতার হার বাড়ছে। ২০১৫ সালে ১,২৯,১৯৩টি নারীবিরোধী সহিংসতা হয়েছে। ২০১৬ সালে এ সংখ্যা ছিল ১,৪২,৮৯৩টি। গত বছরের পূর্ণাঙ্গ বার্ষিক পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি। তবে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১,২৫,৭৬৯টি সহিংসতার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সহিংসতা ও বৈষম্য বন্ধের দাবিতে ধর্মঘটে নামছেন স্প্যানিশ নারীরা। মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মেয়রসহ উচ্চ পর্যায়ের নারী রাজনীতিবিদরাও কর্মবিরতি কর্মসূচিতে শামিল হয়েছেন। ‘এইট মার্চ কমিশন’ নামের একটি আমব্রেলা সংগঠনের উদ্যোগে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো পুরুষ ও নারীর মধ্যে সামাজিক ও আর্থিক অসমতা কমানো। এ ধর্মঘটের আরেকটি উদ্দেশ্য হলো, পুরুষদের হাতে কর্মভার ছেড়ে দিয়ে তাদেরকে বোঝানো যে প্রতিদিন নারীদেরকে বাড়িতে কত কাজ করতে হয়।

কমিশনের ইশতেহারে বলা হয়, ‘আজ আমরা যৌন নিপীড়ন, শোষণ এবং সহিংসতামুক্ত সমাজের দাবি জানাচ্ছি। পুরুষতন্ত্র এবং পুঁজিবাদের জোট যা আমাদেরকে দমিত, নমনীয় ও শান্ত দেখতে চায় তার  বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও সংগ্রাম করার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। বাজে কর্মপরিবেশ কিংবা একই কাজের জন্য পুরুষের চেয়ে কম মজুরি পাওয়ার বিষয়গুলো আমরা মানি না। আর সেকারণে আমরা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছি।’

গত বছর ইউরোপীয় কমিশনের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছর স্পেনে পুরুষ ও নারীর বেতন বৈষম্য ২০০৭ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে কমেছে। ২০০৭ সালে এ বৈষম্য ১৮.১ শতাংশ হলেও ২০১৫ সালে তা কমে ১৪.৯ শতাংশ হয়েছে। স্পেনের নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশটিতে একই কাজের জন্য পুরুষের চেয়ে নারীরা ১২.৭ শতাংশ বেতন কম পান।