১৮০ কিলোমিটার হেঁটে মুম্বাইয়ে ৩৫ হাজার কৃষক

ভারতে কৃষি-নীতিতে পরিবর্তন ও ঋণ মওকুফের দাবিতে আন্দোলনরত মহারাষ্ট্রের কৃষকরা মুম্বাইয়ে পৌঁছেছেন। ১৮০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে ৩৫ হাজার কৃষকের লংমার্চটির মুম্বাইয়ে পৌঁছার খবর দিয়েছে ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি। ১২ মার্চ সোমবার মুম্বাইয়ের বিধানসভা ভবনের সামনে বিক্ষোভ করার কথা রয়েছে ওই কৃষকদের।
noname

ঋণ মওকুফের স্কিম চললেও সুবিধার সে উত্তাপ লাগেনি মহারাষ্ট্রের কৃষকদের গায়ে। বাধ্য হয়ে বহু কৃষক বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ। অখিল ভারতীয় কৃষক সভা দলের নেতৃত্বে আত্মহত্যাকারী কৃষকদের পরিবারসহ  প্রায় ৩৫ হাজার কৃষক তাই এবার যথাযথ ঋণ সুবিধার জন্য মুম্বাইয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্যমতে, সোমবার তারা রাজ্যসভা ঘেরাও করবে। সেখানে যাবতীয় ঋণ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পাশাপাশি আদিবাসী ভূমি কৃষকদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হবে। বহু সংখ্যক আদিবাসী কৃষক অংশ নিয়েছেন ওই লং মার্চে। তারা বলেছেন, জমি তাদের কাছে জীবন-মরণ প্রশ্ন।

ভারতীয় কৃষক সভার প্রেসিডেন্ট অশোক ঢালি এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, রবিবার কৃষিমন্ত্রী গিরিশ মহাজনের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। অশোক ঢালি জানিয়েছেন, কৃষিমন্ত্রী কৃষকদের কথা শুনবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তার দাবি, ২৫ হাজার কৃষক নিয়ে শুরু হওয়া লংমার্চটি এখন ৫০ হাজার কৃষকের সমাবেশে রূপান্তরিত হয়েছে। সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

কৃষকদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার যে কৃষিনীতি প্রণয়ন করেছে তা কৃষকবিরোধী। এছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে জমির ক্ষতি হলেও সরকার ঠিকমতো ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না। এতে কমপক্ষে ২ কোটি ৯৩ লাখ কৃষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ বাবদ ঋণের টাকা মওকুফ করার দাবি তাদের। সেই সঙ্গে জমিতে ব্যবহৃত সেচযন্ত্রের বিদ্যুৎ বিলও মওকুফের ঘোষণা দিতে হবে বলে দাবি করা হয়েছে।

আন্দোলনরত কৃষকরা জানিয়েছেন, সোমবার তারা রাজ্যসভা ঘেরাও করবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান ধরে রাখতে চান। অখিল ভারতীয় কৃষক সভা দলের সেক্রেটারি অজিত নাওয়ালে জানান, রাজ্য সরকার কৃষকদের জন্য যে ঋণ সুবিধা দিয়েছে তা কোনও কাজে আসেনি। ফলে ১ হাজার ৭৫৩ জন কৃষক  ঋণ শোধ  করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। এ কারণে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। তিনি  জানান, দুর্যোগ ও খরার কারণে কৃষকদের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে সরকার এখনও তাদের কোনও ত্রাণ বা ক্ষতিপূরণ দেয়নি। এ সময় তিনি সরকারকে ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪০ হাজার কোটি রুপি দেওয়ার দাবি জানান।