আফরিন ঘিরে ফেলেছে তুর্কি বাহিনী, মানব ঢাল হয়ে ঠেকানোর প্রস্তুতি জনতার

সিরীয় শহর আফরিনে তুর্কি সেনা অভিযানের গতিতে বিস্মিত সেখানকার মানুষ। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইতোমধ্যে তুর্কি সামরিক বাহিনীসহ তাদের সহযোগীরা কুর্দি নিয়ন্ত্রিত শহরটি ঘিরে ফেলেছে। তবে আফরিন রক্ষায় মানব ঢাল হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাশাপাশি তুরস্কে বসবাসকারী কুর্দি সমর্থকরা জানিয়েছেন, আফরিনের সুরক্ষায় তারা তুরস্ক সীমান্ত থেকে এসে মানব ঢাল হতে প্রস্তুত। 

আফরিনের কুর্দি গ্রামবাসীরা

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের মতে, যুদ্ধের কারণে পালানোর পরও আফরিনে এখনও ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস করছেন। সেখান থেকে কুর্দিদের উৎখাত করতে গত ২০ জানুয়ারি অভিযান শুরু করে তুরস্ক। কুর্দিদের সামরিক বাহিনী ওয়াইপিজি সিরিয়ায় আইএস দমনে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিল। কিন্তু তুরস্ক তাদের সন্ত্রাসীগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে থাকে।

কয়েক সপ্তাহের লড়াইয়ের পর তুর্কি সেনা ও তাদের সহযোগী ফ্রি সিরিয়ান আর্মির (এফএসএ) যোদ্ধারা আফরিন ঘিরে ফেলেছে। তারা আফরিনের মূল শহরের বাইরে অবস্থান নিয়েছে আর সেখানে ঢোকার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে তারা অনেক শহর ও গ্রাম কুর্দি বাহিনীর কাছ থেকে দখলে নিয়েছে।

সীমান্ত শহর গাজিয়ান্তেপ থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক আলান ফিশার বলেন, ‘অভিযানের গতিতে সবাই বিস্মিত হয়ে গেছে। আফরিনে বড় ধরনের হামলা ঠেকানোর চেষ্টা হিসেবে তুরস্কের কুর্দি সমর্থকরাও মানব ঢাল হিসেবে কাজ করার পরিকল্পনা করছেন।’

ফিশার বলেন, ‘অনেক লোক বলছেন, তারা এফএসএ ও তুর্কি বাহিনীর বিরুদ্ধে ওয়াইপিজিকে সাহায্য করতে চায়। এজন্য তারা নিজেরা মানব ঢাল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে আর ওয়াইপিজিও তা গ্রহণ করেছে। আর শুধু কুর্দি এলাকার জনগণই সেখান যেতে চাচ্ছেন তা নয়। আমরা খবর শুনেছি, নারীদের সংগঠন ও সামাজিক সংগঠনগুলোও এই কাজে অংশ নিতে চাচ্ছে। তারা এফএসএ ও তুর্কি বাহিনী এবং ওয়াইপিজির মধ্যে অবস্থান নিতে চান।’ ফিশার আরও বলেন, ‘কুর্দিরা মানব ঢাল সম্পর্কে বলছে, আমরা মানবিক দিক বিবেচনার জন্য আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি।’

গত দুদিনে বেশি সময় ধরে আফরিনে তুর্কি বাহিনী বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সেখানকার পানি সরবরাহ ও ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

শনিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, তার বাহিনীর আফরিন শহরে ঢোকা এখন কয়েক দিন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে তারা আরও সময় নিচ্ছে। বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু ঠেকানোর কৌশল তৈরিতেই তারা এ সময় নিচ্ছে।