ইউএস বাংলার বিমান বিধ্বস্তে নিহত অন্তত ৮, বহু হতাহতের শঙ্কা

বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমানের ৭ আরোহীর প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করেছে নেপালের বিমান কর্তৃপক্ষ। অন্তত ৫০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা জানিয়েছে তারা। নেপালের ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিএস ২১১ নামের ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হয়। নেপাল টাইমস-এর খবরে বলা হয়েছে, ৭৮ জনকে ধারণে সক্ষম ওই বিমানে ৪ ক্রু ও ৬৭ যাত্রী মিলে ৭১ জন আরোহী ছিল।  বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু মরদেহও উদ্ধার করা হয়েছে। 
noname

ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে পৌঁছায়। অবতরণের সময় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এরপর বিমানবন্দরের কাছেই একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয় এটি।  বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের মধ্যে ৩৭ জন পুরুষ , ২৭ জন নারী ও দুইজন শিশু ছিলেন। ত্রিভূবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও নেপাল সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। ত্রিভূবন বিমানবন্দরের মুখপাত্র প্রেম নাথ ঠাকুর জানান, ২৫ জনকে কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ৭ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি স্থানীয় সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে ভারতীয় একটি সম্প্রচারমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরটি বলছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ২০ টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।


noname

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'আমরা নিজেরাও এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি কী ঘটেছিল। আমাদের স্টেশন ম্যানেজারও দেশে রয়েছে। বিস্তারিত জেনে আমরা জানাতে পারবো।'

noname
নেপালের বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পরিচালক সঞ্জীব গৌতম বলেন, রানওয়েতে অবতরণের সময় বিমানটি নিয়ন্থ্রণ হারিয়ে ফেলে। এটা দক্ষিণ দিকে নামার কথা থাকলেও উত্তর দিক দিয়ে নামে। তিনি বলেন, ‘কারিগরী ত্রুটির কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। আমরা বিধ্বস্ত হওয়ার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’

Capture

আর্নিকো পান্ডে নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী নেপালের সংবাদমাধ্যম মাই রিপাবলিকাকে বলেছেন রানওয়েতে বাঁক নেওয়ার সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। তিনি বলেন, আমি সংযোগসড়কে ছিলাম। দেখলাম বিমানটি টার্মিনালকে পেছনে ফেলে দক্ষিণ দিকে দ্রুত বাঁক নিলো। এরপরই রানওয়ে থেকে তা অদৃশ্য হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে বিশালাকারের ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। তিনি জানান, খু্ব নিচে দিয়ে কন্ট্রোল টাওয়ারের ওপর দিয়ে বিমানটিকে উড়তে দেখেছিলেন।
ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মহাব্যবস্থাপক রাজ কুমার চেত্রিকে উদ্ধৃত করে নেপালি সংবাদমাধ্যম মাই রিপাবলিকা জানিয়েছে, বিমানটির ৫০ জনেরও বেশি আরোহী নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজ কুমার বলেন, ‘আমরা উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছি। বিস্তারিত তত্য সংগ্রহ করছি আমরা। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর ত্রিভূবন বিমান বন্দরের সব ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। নেপালের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ জানিয়েছে ওই দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৮ জন নিহত হয়েছে। ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, অন্তত ২৩ জন আহত ও দশ জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।