দুর্ঘটনা নিয়ে পরস্পরকে দোষারোপ ইউএস বাংলা ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের

নেপালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দাবি, পাইলটের ভুলেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। আর ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হচ্ছিলো তাদের।

নেপালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের বিমান বিধ্বস্তঢাকা থেকে রওনা দিয়ে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে পৌঁছায় বিমানটি।অবতরণের সময় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এরপর বিমানবন্দরের কাছেই একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয় এটি। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যাত্রীদের মধ্যে ৩৭ জন পুরুষ, ২৭ জন নারী ও দুইজন শিশু। ত্রিভুবন বিমানবন্দরের মুখপাত্র প্রেমনাথ ঠাকুর জানান, ২৫ জনকে কাঠমান্ডু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ৭ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। নেপালের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র গোকুল ভান্ডারি রয়টার্সকে বলেছেন, 'এখন পর্যন্ত আমরা ৫০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। জ্বলন্ত ধ্বংসাবশেষ থেকে কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।' ওই সেনা মুখপাত্র জানান, নয়জনের এখনও কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমান দুর্ঘটনার জন্য পাইলটের ভুলকেই দায়ী করছে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, পাইলট তাদের নির্দেশনা মানেননি।   বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার রাজ কুমার ছেত্রি বলেছেন, বিমানটি কন্ট্রোল রুমের নির্দেশনা অনুসরণ করেনি। তিনি দাবি করেন, ‘বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বিমানটিকে দক্ষিণ দিকে অবতরণের অনুমোদন দিলেও তারা উত্তর দিকে অবতরণের চেষ্টা করে। এর আগে আকাশে বেশকয়েকবার ঘুরতে থাকে বিমানটি।’ 

তবে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরান আফিফ দাবি করেন, এ দুর্ঘটনায় বিমানের পাইলটের কোনও গাফিলতি ছিল না। তিনি বলেন, নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কন্ট্রোল রুম থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়ার কারণেই ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে।

নেপাল টাইমস-এর খবরে বলা হয়েছে, ৭৮ জনকে ধারণে সক্ষম ওই বিমানে যাত্রীদের পাশাপাশি ৪ ক্রু ও ৬৭ যাত্রী মিলে ৭১ জন আরোহী ছিলেন। এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের সিইও বলেন, আমাদের ফ্লাইটটি অবতরণ করার আগের তিন মিনিটের একটি কথোপকথন আমাদের হাতে এসেছে। ফ্লাইটের পাইলটের সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের যে কথা হয়, তা রয়েছে ওই কথোপকথনে। এটা থেকে আমরা ধারণা করছি, দুর্ঘটনায় আমাদের পাইলটের দিক থেকে কোনও গাফিলতি ছিল না।

কোন রানওয়ে দিয়ে অবতরণ করতে হবে, সে সম্পর্কে ওই তিন মিনিটের কথোপকথনে বিভিন্ন ধরনের তথ্য দেওয়া হয়েছে। অবতরণের তথ্য সঠিকভাবে না দেওয়ার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।