'সম্ভাবনাময় মহাবিশ্বকে উন্মুক্ত করেছেন হকিং'

কালের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্বের বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্যসহ বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের উজ্জ্বল এই নক্ষত্র ৭৬ বছর বয়সে বুধবার সকালে পৃথিবী ছাড়েন। মৃত্যুর পরপরই শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করেছেন ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েব-ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ’র প্রতিষ্ঠাতা স্যার টিম বার্নারস লি, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর স্টিফেন টুপি, মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। 

স্টিফেন হকিং

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর স্টিফেন টুপি বলেছেন, ‘লাখ লাখ মানুষের অনুপ্রেরণা ছিলেন একজন হকিং। প্রফেসর হকিং একজন অনন্য ব্যক্তি, যাকে শুধু ক্যামব্রিজ নয় বরং সারাবিশ্বেই আন্তরিকতা ও আবেগের সঙ্গে স্মরণ করা হবে। বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং বিজ্ঞান ও গণিতকে জনপ্রিয় করে তুলতে তার অবদান অমোচনীয় গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছে। তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লাখ লাখ মানুষকে উৎসাহ জোগাবে।’

স্টিফেন হকিংকে স্মরণ করে স্যার টিম বার্নারস লি টুইটারে তিনি লেখেন, এক অসামান্য হৃদয় ও বিস্ময়কর কর্মশক্তিকে হারালাম। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসাও টুইটারে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। তারা বলেছে, ‘তার তত্ত্বগুলো সম্ভাবনার মহাবিশ্বকে উন্মুক্ত করেছে আর সেসব আমরা ও বিশ্ব বিশ্লেষণ করছি। মাইক্রোগ্রাভিটিতে সুপারম্যানের মতো তিনি উড়তে থাকবেন।’

দ্য প্লানেটারি সোসাইটির শোকবার্তায় লেখা হয়েছে, অনিন্দ্য সুন্দর মননের প্রতি শ্রদ্ধা। জ্যোতির্পদার্থবিদ নিল ডিগ্রেস টাইসুন হকিংয়ের সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, তার মৃত্যুতে বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণে শূন্যতা সৃষ্টি করবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটার পোস্টে লিখেছেন, 'প্রফেসর স্টিফেন হকিং ছিলেন অসামান্য বিজ্ঞানী ও একাডেমিক। তার জ্ঞান ও কর্মস্পৃহা সারাবিশ্বের মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা হবে। তার মৃত্যু সবার জন্যই শোকের কারণ। প্রফেসর হকিংয়ের অগ্রগামী কাজ বিশ্বকে আরও সুন্দর করেছে। তার আত্মা শান্তি পাক।'

মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলা লিখেছেন, আজ আমরা এক মহান ব্যক্তিকে হারালাম।
অনেক বিজ্ঞানী হকিংয়ের সঙ্গে তাদের কাজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্পদার্থবিদ জোনাথন ম্যাকডোয়েল কথা বলতে না পারলেও বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে হকিংয়ের দৃঢ়চেতার কথা স্মরণ করেন।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাউন্ট স্ট্রমোলো অবজারভেটরির রিসার্চ ফেলো ড. ব্রাড টাকার মনে করেন, হকিং কেবল সৃষ্টিতত্ত্ব ও জ্যোতির্বিদ্যার শীর্ষ ব্যক্তি ছিলেন না।  প্রত্যেক মানুষকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন নিজেকে আর অজানাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে। ড. ব্রাড টাকার লেখেন, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মনুষ্য প্রজাতির মনে জারি থাকা প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি হওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহ আর প্রেরণা জুগিয়ে তিনি আমাদের ছেড়ে গেছেন'।