নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতন তদন্তে সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান এইচআরডব্লিউ'র

সৌদি রাজপরিবারে গত নভেম্বরের ধরপাকড়ে গ্রেফতারকৃতদের রিটজ কার্লটন হোটেলে নির্যাতনের ব্যাপারে তদন্ত চালাতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। বুধবার এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি এ আহ্বান জানায়।

দুর্নীতির অভিযোগে আটক থাকা অবস্থায় এক সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যুর খবর সামনে আসার পর এইচআরডব্লিউ’র পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানানো হলো। অভিযোগ উঠেছে, আলি বিন আব্দুল্লাহ আল জারাশ আল কাহতানি নামের ওই কর্মকর্তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতনের ফলে তার ঘাড় মটকে যায়। এতে তার মৃত্যু হয়।

এইচআরডব্লিউ’র বিবৃতিতে ওই অভিযানে আটক বিশিষ্টজনদের শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর সৌদি আরবে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে যুবরাজের নির্দেশে রাজপরিবারের ১১ সদস্যকে আটক করা হয়। পরবর্তী বেশ কিছুদিন ধরে এ ধরপাকড় অব্যাহত থাকে। এ সময়ে রাজপরিবারের নারী সদস্যসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের আটক করা হয়। নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতনের শিকার অন্তত ১৭ জনকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে।

পরে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে আটককৃতদের মুক্তির প্রস্তাব দেয় কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী মুক্তিপণ বা অর্থের বিনিময়ে বেশিরভাগকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ থেকে তাদের আয় হয়েছে ১০ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ লাখ ৯০ হাজার ৭২৬ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এভাবে অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাবকে ঘুষ হিসেবে অভিহিত করে কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম। তবে সৌদি যুবরাজের দাবি, প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল একটা ‘শক থেরাপি’। সৌদি আরবের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আধুনিকায়নে এর প্রয়োজন ছিল। এর মধ্যেই সম্প্রতি ঘাড় মটকে যাওয়া ওই বন্দির মৃত্যুর খবরে নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতনের বিষয়টি সামনে এসেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সারাহ লিয়াহ হুইটসন। তিনি বলেন, রিটজ কার্লটন হোটেলে নির্যাতনের যে অভিযোগ পাওয়া গেছে তা সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কারের দাবির প্রতি একটি গুরুতর আঘাত। বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য দৌড়ঝাঁপ করলেও বিনিয়োগকারীরা শাসন ব্যবস্থায় আইন ও মৌলিক অধিকারের মতো বিষয় বিবেচনায় দ্বিতীয়বার ভাবতে শুরু করবে। সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।