ফরাসি দূতাবাসের গাড়িচালকের বিরুদ্ধে অস্ত্র চোরাচালানের অভিযোগ ইসরায়েলের

ইসারেয়েলের সরকার ফরাসি দূতাবাসের একজন গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে অস্ত্র চোরাচালানের মামালা দিয়েছে। ওই গাড়িচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে পশ্চিম তীরে অস্ত্র চোরাচালান করতেন। ফরাসি দূতাবাসের গাড়ি ব্যবহার করে অস্ত্র চোরাচালান করার দায়ে গ্রেফতারকৃত ওই গাড়িচালকের সঙ্গে দূতাবাসের একজন ফিলিস্তিনি নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইসরায়েলই বাহিনী জানিয়েছে, এতে গাজায় অবস্থিত ফরাসি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আরেকজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জড়িত। সোমবার এ ঘটনায় ইসরায়েলের অভিযোগ আনার খবর নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। অভিযুক্তকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গ্রফতার করা হয়েছিল।

মুখ ঢেকে রেখেছেন অভিযুক্ত ফরাসি নাগরিক ফ্রাঙ্ক

ইসরায়েলের সংশ্লিষ্ট সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের একটি চোরাচালান চক্রের হয়ে কাজ করতেন অভিযুক্ত গাড়ি চালক রোমেইন ফ্র্যাঙ্ক। ২৩ বছর বয়সী ফ্র্যাঙ্ক নিজে ফরাসি নাগরিক। ওই ঘটনায় তার সঙ্গে আরও ৭ ব্যক্তিকে আটক করেছে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা শিন বেত, যার কাজ জঙ্গি দমন, গোয়েন্দা নজরদারিসহ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর দেখভাল করা। সংস্থাটি জানিয়েছে,  ফ্র্যাঙ্কের কাছ থেকে ৭০টি পিস্তল ও দুটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার এই অস্ত্র চোরাচালানে জড়িত হওয়ার কারণ অর্থ, ফিলিস্তিনিদের প্রতি কোনও আদর্শিক সমর্থন নয়। তিনি ৭ হাজার ৬০০ ডলার পেয়েছিলেন অস্ত্রগুলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্রে অস্ত্র রাখা, অস্ত্র চোরাচালান, প্রতারণা এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র যুক্ত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ফ্র্যাঙ্কের সঙ্গে আটককৃতদের অন্তত একজন ফিলিস্তিনি নাগরিক, যিনি ফরাসি দূতাবাসে নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি করতেন।

শেন বেইতের মতে, দূতাবাসের গাড়িকে ইসরায়েলি নিরাপত্তাবাহিনী বিশেষ তল্লাসি করত না। সেই সুযোগের অপব্যবহার করেই ওই ফরাসি নাগরিক এতগুলো অস্ত্র চোরাচালানের কাজে রাজি হয়েছিলেন। তিনি প্রথম চালান নিয়ে গিয়েছিলেন গত বছরের ২১ ডিসেম্বরে আর সর্বশেষ গত ১২ ফেব্রুয়ারি। গাজার ফ্রেঞ্চ কালচারাল সেন্টারের একজন ফিলিস্তিনি চাকরিজীবী ফ্র্যাঙ্ককে অস্ত্রগুলো দিয়েছিল। শেন বেইত এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘কূটনৈতিক দায়মুক্তির এটা এক ঘৃণ্য অপব্যবহার যাকে কাজে লাগিয়ে এতগুলো অস্ত্র চোরাচালান করা হচ্ছিল। এসব অস্ত্র ইসারেয়েলের সাধারণ নাগরিক ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে জঙ্গি আক্রমণে ব্যবহৃত হতে পারত।’

মন্তব্য করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ফ্রাঙ্কের আইনজীবীর মন্তব্য জানা যায়নি। আরা ফরাসি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রেরও কেউ মন্তব্য জানায়নি। অভিযুক্ত হলে তার দীর্ঘ কারাদণ্ড হতে পারে। ইসরায়েলের অভিজ্ঞ আইনজীবী এলাদ রাথ রয়টার্সকে বলেছেন, ‘অভিযোগটি খুবই স্পষ্ট এবং একটি নতুন নজির স্থাপন করেছে। শাস্তি হিসেবে ১০ বা তার চেয়ে বেশি বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।’ ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র প্যারিসে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমার বিষয়টি গভীর গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। ইসারায়েলে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত  অভিযুক্তের সঙ্গে দেখা করেছেন যাতে তার আইনি অধিকার নিশ্চিত করা যায়।