তদন্তে ইরাক যুদ্ধ ভুল প্রমাণিত হয়েছিল



ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা বিচারে ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যে গঠিত হয় চিলকট কমিশন। ১৩ বছর পর ২০১৬ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত হয় কমিশনের রিপোর্ট। এতে ইরাক যুদ্ধকে ভুল আখ্যা দেওয়া হয়। বলা হয়, যুদ্ধ অনিবার্য ছিল না। ভিন্ন পথে সংকট নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া যেত।
বহুল আলোচিত চিলকট প্রতিবেদনে ভুল প্রমাণিত হয়েছিল ইরাক আগ্রাসনের সিদ্ধান্ত

ইরাক যুদ্ধে ব্রিটেনের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রকাশিত এক রিপোর্টে ওই যুদ্ধকে ‘ভুল’ ও ‘অপরিণামদর্শী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৩ বছর আগে ইরাক আক্রমণে ব্রিটেনের যোগ দেয়া নিয়ে প্রকাশিত এক চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক পথ থাকা সত্ত্বেও ব্রিটিশ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তার সরকার সামরিক আগ্রাসনে গেছে। আর এজন্য কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে টনি ব্লেয়ারকে। এরইমধ্যে তাকে আদালতের  মুখোমুখি করার প্রস্তুতি শুরু করেছেন আইনজীবীরা। 
ইরাক যুদ্ধের ৬ষ্ঠ বছরে এসে ২০০৯ সালে চিলকট কমিশন গঠিত হয়। দীর্ঘ ছয় বছর এই কমিশন ইরাক যুদ্ধের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে। স্যার জন চিলকট ২০১৬ সালে রিপোর্টটি জনসম্মুখে প্রকাশ করতে সক্ষম হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ইরাক যুদ্ধের ১৩ বছর পর ওই যুদ্ধে ব্রিটেনের ভূমিকা নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করলেন তিনি।
প্রতিবেদনে ইরাক যুদ্ধকে ভুল ও অপরিণামদর্শী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, স্পষ্টতই গোয়েন্দাদের ত্রুটিপূর্ণ মূল্যায়ন ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই ইরাকে হামলা চালানো হয়েছিল। ব্রিটিশ সরকার যে পরিস্থিতিতে যুদ্ধে যাওয়ার আইনগত ভিত্তি ছিল বলে মনে করেছিল, তা যথাযথ ছিল না। অধীর আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করা এই প্রতিবেদন পেশ করার সময় চিলকট বলেন, গোয়েন্দা তথ্যে সাদ্দামের জীবাণু অস্ত্রের উৎপাদন অব্যাহত রাখার প্রমাণ মেলেনি। তিনি বলেন, ইরাকের ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র বিশ্বকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলেছ, একথা যত নিশ্চয়তার সাথে বলা হয়েছিল, তা গ্রহণযোগ্য নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরাককে নিরস্ত্র করার জন্য সকল শান্তিপূর্ণ উপায় না শেষ করেই  ব্রিটিশ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তার সরকার সামরিক আগ্রাসনের পথ বেছে নেন। কোনও বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়াই সৈন্য পাঠানো হয় ইরাকে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদ্দাম হোসেন সন্দেহাতীত অত্যাচারী একনায়ক হলেও নিরাপত্তা কাউন্সিলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। অনেক শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তা নেওয়া হয়নি।

সূত্র: গার্ডিয়ান, বিবিসি