প্রথমবারের মতো অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে বলছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো

ইউটিউবের প্রধান কার্যালয়ে হামলার পর প্রথমবারের মতো অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে সরব হতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। সান ব্রুনোয় ওই হামলার পর অন্তত শীর্ষ তিনটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছেন। আগামীতে সিলিকন ভ্যালির অন্যান্য শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের সীমা বাড়ানোর পক্ষে সরব হতে পারে; এমন ইঙ্গিত দিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
noname

গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে ১৭ জনের প্রাণহানির পর যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে আবারও জোরালো হয়েছে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবি। এই দাবিতে গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার স্কুল শিক্ষার্থীদের আয়োজনে রাজপথে নামে কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ। সমালোচকদের দাবি, লবিস্ট গ্রুপের জোরালো প্রচেষ্টার কারণে বারবার থেমে যায় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর করবার প্রচেষ্টা। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে সমলিঙ্গের বিয়ের বৈধতার মতো বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললেও ইউটিউব কার্যালয়ে হামলার আগে কখনও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে কথা বলেনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ক্যালিফোর্নিয়ার সান ব্রুনোতে ইউটিউব সদর দফতর  আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো এই দাবির কথা জানা যায় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর একাংশের কাছে থেকে।

টুইটার ও স্কয়ার ইনকর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জ্যাক ডরসি ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় টুইটারে লিখেছেন,  ‘আমাদের স্কুল, চাকরিস্থল কিংবা বসবাসের এলাকায় এমন ঘটনা আর ঘটবে না; এমন ভাবনা কিংবা প্রার্থনা জারি করে আমরা প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থায় থাকতে পারি না। তিনি আরও লিখেছেন, অস্ত্র সংক্রান্ত নীতিতে পরিবর্তনে এটাই শ্রেষ্ঠ সময়।’

ডরসির পরই টুইটারে একই দাবিতে সরব হন উবার টেকনোলোজিস ইনকর্পোরেশনের সিইও দারা খোসরোশাহী ও বক্স ইনকর্পোরেশনের সিইও আরোন লেভি। মঙ্গলবারের গুলির ঘটনার পর পর্যায়ক্রমে এন্ড গান ভায়োলেন্স ও নেভারএগেইন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে টু্ইট করেন তারা। এই হ্যাশট্যাগ দুটি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে প্রচারণা হয়।

খোসরোশাহী এন্ড গান ভায়োলেন্স হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে লেখেন, উবার টিমের পক্ষ থেকে ইউটিউব ও গুগলের সবার প্রতি সংহতি জানাচ্ছি। যারা প্রথম হামলা সামলানোর কাজে নেমেছেন, তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। এটি নতুন আরেকটি ঘটনা, যা অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে আমাদের সোচ্চার হওয়ার তাগিদ দিয়ে গেল। লেভি তার টুইটে নেভার এগেইন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে লেখেন, ইউটিউবে গুলির ঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত। গুগলের বন্ধু ও তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

ঘটনার পর ইউটিউবের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছেন অন্য শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও। অ্যাপল ইনকর্পোরেশনের সিইও টিম কুক, আমাজন.কম ইনকর্পোরেশনের সিইও জেফ বেজোস, সেলসফোর্স.কম ইনকর্পোরেশনের সিইও মার্ক বেনিয়োফ ও ফেসবুক ইনকর্পোরেশনের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা সেরিল স্যান্ডবার্গ রয়েছেন এই তালিকায়। রয়টার্স লিখেছে, শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর এই তৎপরতার মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে আসন্ন দিনগুলোতে আরও কিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এতে ভূমিকা রাখবে।