তাইওয়ান প্রণালীতে চীনা নৌবাহিনীর গোলাবর্ষণ মহড়ার পরিকল্পনা

তাইওয়ান প্রনালীতে গোলাবর্ষণ মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে চীনের নৌবাহিনী। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠতাকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই বুধবারের এই মহড়ার ঘোষণা দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং। নিয়মিত সামরিক জোনে এই মহড়ার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তাইওয়ানের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে নিজেদের জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর প্রথমবারের মতো গোলাবর্ষণের এই মহড়া আয়োজন করতে যাচ্ছে চীন।

চীনের একটি যুদ্ধজাহাজ

২০১৫ সালের নির্বাচনের আগে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও তাইওয়ানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মা ইয়েং জেইয়ু বৈঠকে মিলিত হন।দুই সরকারের মধ্যে সেটা ছিল এক ঐতিহাসিক বৈঠক। তবে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তসাই ইং-ওয়েন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সেই সম্পর্কে ভাটা পড়ে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন নতুন মার্কিন প্রশাসন তাইওয়ানের সঙ্গে গত মাসে দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে থাকা একটি ভ্রমণ চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ও তাইপের মধ্যে আরও আনুষ্ঠানিক সফরের সুযোগ প্রসারিত হয়েছে। এসব ঘনিষ্ঠতা সহজভাবে নেয়নি তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে বিবেচনা করা চীন।

মার্কিন সামুদ্রিক নিরাপত্তা বিষয়ের গবেষক কলিন কোহ সিএনএনকে বলেছেন, চীন দৃষ্টিগোচর করাতে চায় যে চীনের নৌবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। আর দ্বিতীয়ত তাইপের সরকারকে তারা বার্তা দিতে চায় যে আর সামনে এগিয়ো না।

গত ১০ ও ১১ এপ্রিল দক্ষিন চীন সাগরে নৌবাহিনীর ঐতিহাসিক মহড়ার পর তাইওয়ান প্রণালীতে নতুন গোলাবর্ষণ মহড়ার পরিকল্পনার কথা বলছে চীন। নতুন এই মহড়ার খবর প্রকাশের পর তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিয়মিত সামরিক জোনে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। যেকোনও হুমকি থেকে দেশকে রক্ষায় প্রস্তুত জানিয়ে সামরিক বাহিনীর ওই বিবৃতিতে জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

১৯৪৯ সালে গৃহযুদ্ধ অবসানের পর থেকে স্বশাসিত হয়ে পরিচালিত হচ্ছে তাইওয়ান। ওই যুদ্ধে জাতীয়তাবাদীদের দ্বীপ ছাড়তে বাধ্য করার পর রিপাবলিক অব চীনের ব্যানারে স্বশাসিত হয়ে আসছে তাইওয়ান। তাইপে এবং বেইজিং তাইওয়ানকে চীনের অংশ বলে বিবেচনা করলেও কোনও সরকারই পরস্পরকে আইনগত স্বীকৃতি দেয় না। তাইওয়ানের বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরে স্বাধীনতাপন্থি মনোভাব বেশ প্রবল। এই মনোভাবের বিরোধিতা করে চীন। বেশ কয়েকবারই তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে তারা হুমকি দিয়েছে প্রয়োজন পড়লে বল প্রয়োগ করে দ্বীপটিকে নিজেদের কবজায় রাখবে তারা।