আসিফা ধর্ষণ মামলায় নারকো পরীক্ষার দাবিতে মিছিলে সাবেক মন্ত্রী

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মিরে আসিফা ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সিবিআইয়ের হস্তক্ষেপ ও নারকো পরীক্ষার দাবিতে একটি মিছিলে অংশ নিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী চোধুরী লাল সিং। এর আগে ধর্ষণে অভিযুক্তদের পক্ষে কথা বলার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগও করতে হয় তাকে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। 

Kathua-PTI-380এ বছরের জানুয়ারিতে কাঠুয়ার উপত্যকায় ঘোড়া চড়ানোর সময় অপহরণ করা হয় আসিফাকে। আদালতে দায়ের করা মামলার বিবরণ অনুযায়ী, আসিফা নামের ওই শিশুকে অপহরণের জন্য অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও দেবীস্থান মন্দিদের হেফাজতকারী সানজি রামই তার ভাগ্নে ও একজন পুলিশ সদস্যকে নির্দেশ দেয়। নির্দেশ বাস্তবায়নের পর সাত দিন ধরে মন্দিরে আটকে রেখে একদল হিন্দু পুরুষ ধর্ষণ করে আসিফাকে। পরে মাথায় পাথর মেরে ও গলা টিপে হত্যা করা হয় তাকে। আসিফাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটজনকে অভিযুক্ত করেছে ভারতের আদালত। মধ্য জানুয়ারির ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) দিন অভিযোগপত্র জনসম্মুখে আনা হয়। জানুয়ারিতে এ নিয়ে তেমন উত্তেজনা না হলেও এ ঘটনায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর সোচ্চার হয়ে ওঠে বলিউডসহ সারা ভারত।

সোমবার এই মামলায় অভিযুক্ত আটজন আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। সাতজনকেই বিচারক সঞ্জয় গুপ্তার সামনে আনা হয়েছিল। ২৮ এপ্রিল ধার্য করা হয়েছে পরবর্তী শুনানির তারিখ।

বুধবার সকালে জম্মু থেকে মিছিলটি নিয়ে কাঠুয়ায় যায় আন্দোলনকারীরা। এদিকে এই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা দ্বীপক খাজুরিয়াও পুলিশ ভ্যান থেকে জানান, তিনি চান তদন্তকাজে সিবিআই অংশ নিক এবং নারকো পরীক্ষা করা হোক।  টাইমস নাউয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, লাল সিং জম্মু থেকে কাঠুয়া পর্যন্ত একটি মিছিলে নেতৃত্ব দেন। তারা আসিফা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা-সিবিআই’কে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির পদত্যাগও দাবি করেন। সিং বলেন, ‘যদি শান্তি রক্ষায় দুইজন মন্ত্রী পদত্যাগ করতে পারেন তাহলে যারা প্রকৃতপক্ষে এই পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী তাদেরও নিজের বিবেকের কথা শোনা উচিত’।

কাশ্মিরের জোট সরকারের বিজেপির মন্ত্রী চন্দ্র প্রকাশ গঙ্গা ও চৌধুরী লাল সিং রাজ্য সরকার থেকে পদত্যাগের করেছিলেন। ওই দুই মন্ত্রী কাঠুয়ায় আসিফা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অভিযু্ক্তদের রক্ষার দাবিতে হিন্দু একতা মঞ্চের মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। পরে চৌধুরী সিং দাবি করেন, মিছিলে অংশ নিয়ে তিনি পরিস্থিতি শান্ত করতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এই পরিস্থিতি শান্ত করতে চেয়েছি। আমরা তাদের ফিরে যেতে বলেছি। মন্ত্রী আব্দুল গণি কোহলিকে হত্যার শিকার আসিফার বাড়িতে পাঠানো হয়েছে যেন কোনও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়।’