কে এই ডিয়াজ কানেল?

কিউবায় শেষ হচ্ছে ক্যাস্ত্রো পরিবারের পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরা চলা শাসন। দেশটির অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রোর পর এই ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন তার ভাই রাউল ক্যাস্ত্রো। ১০ বছর পর এবার দায়িত্বভার তার সহযোগী মিগেল ডিয়াজ কানেলের কাঁধে। আর কিউবাও প্রথমবারের মতো দেখতে যাচ্ছে ক্যাস্ত্রো পরিবারের বাইরে কোনও প্রেসিডেন্ট। তবে ধারণা করা হচ্ছে এখনও বড় ধরনের প্রভাব থাকবে ক্যাস্ত্রোর।

মিগুয়েল ডিয়াজ ক্যানেল

বর্তমান প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ত্রোর প্রধান সহযোগী মিগেল ডিয়াজ ক্যানেলকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনিত করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। বৃহস্পতিবার কিউবার পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের ফল বা নতুন প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করবে। ২০২১ সাল পর্যন্ত কমিউনিস্ট পার্টির প্রধানের দায়িত্বও পালন করবেন তিনি।

২০১৩ সালে কিউবার ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মিগুয়েল ডিয়াজ কানেল। তার আগে পর্যন্ত তিনি ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতিতে থাকলেও নিজেকে সেভাবে প্রকাশ করতেন না। তবে তিনি প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোর খুবই কাছের মানুষ।

তার জন্ম ১৯৬০ সালে। লেখাপড়া করেছেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ। তার জন্মের এক বছর আগে কিউবায় ফিদেল কাস্ত্রো প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করেন। ফলে কিউবার বিপ্লব দেখা হয়নি তার। তাই বিপ্লব পরবর্তী প্রজন্ম ভাবছে কিউবায় নতুন কিছু করবেন ডিয়াজ।

৫৭ বছর বয়সী ডিয়াজ কানেল উদারপন্থী হিসেবেও পরিচিত। ২০ বছর আগে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির যুব সংগঠনের মাধ্যমে রাজনীতিতে এসেছিলেন।

রাউল ক্ষমতায় আসার পর পূর্বসূরী ফিদেল ক্যাস্ত্রোর থেকে কিছু কিছু অবস্থান থেকে সরে এসেছিলেন। ব্যক্তিমালিকানা খাতের প্রসার, রিয়াল এস্টেট মার্কেট বৈধকরণ, বিদেশ ভ্রমণ কড়াকড়ি কমিয়ে আনার মতো উল্লেখযোগ্য কাজ ছিল তার।

_100935014_046267625-1

রাউল কাস্ত্রো প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কিউবার সম্পর্ক গড়ে তা এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি দেশের ভিতরেও বেশ কিছু সংস্কার কর্যক্রম শুরু করেছিলেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব কমলেও ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর আবার সেটা বাড়তে শুরু করে।   নতুন এই প্রেসিডেন্ট কি করতে যাচ্ছেন তা এখনও নিশ্চিত নয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যারিবীয় দেশটি নতুন নেতৃত্বে একদলীয় শাসন থেকে বেরিয়ে আসবে, এমনটা ভাবতে চাননা বিশ্লেষকরা। তবে তারা মনে করেন, একদলীয় গণতন্ত্রের পথে হাটতে পারে।

ফলে বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন আসবে না বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। তারা জানান,  ফিদেল ক্যাস্ত্রো এখন অতীত। আর রাউল কাস্ত্রো অবসরে গেলেন। এই পরিবারের বাইরে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে অনেকের শঙ্কা আছে। তবে নতুন নেতৃত্বের উপর রাউল ক্যাস্ত্রোর প্রভাব যে থাকবে, সেই আলোচনাও রয়েছে। আর নতুন নেতৃত্বকে প্রথমে দেশটির অর্থনীতির দিকে নজর দিতে হবে।