হাসপাতালে অসুস্থ ব্যক্তিকে স্যালাইন দিয়ে রাখার ঘটনা নতুন নয়! অনেক সময় বিভিন্ন পশু-পাখিকেও স্যালাইন দেওয়া হয়। তাই বলে গাছকেও স্যালাইন! এমনটাই ঘটেছে ভারতের তেলাঙ্গানা রাজ্যের মাহবুবনগর জেলায়।
জেলার পিল্লালামারি এলাকায় রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বটগাছ। প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো এই গাছটি দেখতে অনেক দর্শনার্থী সেখানে ভিড় করেন। তবে সম্প্রতি উইপোকার আক্রমণে প্রায় মরে যেতে বসেছে গাছটি। তাই এটি রক্ষায় উঠেপড়ে লেগেছে পর্যটন বিভাগ, বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন। এজন্য গত ডিসেম্বর থেকে ওই এলাকায় কোনও দর্শনার্থী প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। গাছটিকে দেওয়া হচ্ছে নানা ধরনের চিকিৎসা।
উইপোকার হাত থেকে বাঁচাতে গাছের গায়ে ফুটো করে ক্লোরোপিরিফোস প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে তাতেও কোনও কাজ হয়নি। বরং উইপোকার আক্রমণে দিন দিন গাছের অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। এক পর্যায়ে পর্যটন বিভাগের কাছ থেকে গাছটির পরিচর্যার দায়িত্ব নেয় বন বিভাগ। কর্মকর্তারা এবার গাছটিকে বাঁচানোর জন্য স্যালাইন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। আর তাতেই ধীরে ধীরে সতেজ হয়ে উঠছে গাছটি।
মাহবুবনগর জেলা বন কর্মকর্তা চুক্কা গঙ্গা রেড্ডি বলেন, গাছটি তিন একরের বেশি জায়গাজুড়ে রয়েছে। এর কিছু অংশ ক্ষয়ে গিয়ে নষ্ট হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে আমরা তিনভাবে গাছটির পরিচর্যা করছি। প্রথমে ক্লোরপিরিফোসের মিশ্রণ গাছের মধ্যে প্রবেশ করিয়েছি। কিন্তু তাতে কোনও ফল পাওয়া যায়নি। পরে স্যালাইনের মতো ফোঁটা ফোঁটা করে একই দ্রবণ গাছে প্রবেশ করিয়েছি। এতে অনেক ভাল ফল পাওয়া গেছে।
রেড্ডি আরও বলেন, স্যালাইন দেওয়া ছাড়াও উইপোকা দমনের জন্য আমরা গাছের গোড়ায় রাসায়নিক দ্রবণ দিয়ে সেচ দিচ্ছি। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ভারী শাখাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে কংক্রিটের অবকাঠামো নির্মাণ করছি। তিনি বলেন, গাছটির অবস্থা এখন অনেকটা স্থিতিশীল। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যেই এটি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তারপরই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে গাছটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।