সৌদি জোটের বিমান হামলায় হুথি বিদ্রোহীদের রাজনৈতিক প্রধান নিহত

সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের প্রধান রাজনৈতিক নেতা সালেহ আল সামাদ নিহত হয়েছেন। আল সামাদ ইয়েমেনের রাজধানী সানা ও অন্যান্য বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকার নিয়ন্ত্রণকারী সুপ্রিম পলিটিক্যাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সোমবার হুথি বিদ্রোহী পরিচালিত আল মাসিরাহ টিভিতে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

হথি বিদ্রোহীদের রাজনৈতিক প্রধান সালেহ আল সামাদ

খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার হুদাইদা প্রদেশে এক বিমান হামলায় আল সামাদ নিহত হন। তার স্থানে মাহদি আল মাশাতকে নতুন সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে।

টেলিভিশনে প্রচারিত বক্তব্যে হুথি নেতা আব্দুল মালিক আল হুথি বলেন, বৃহস্পতিবারের ওই বিমান হামলায় মোট সাতজন নিহত হয়। তিনি বলেন, ‘এই অপরাধ আমাদের জনগণ ও রাষ্ট্রের মনোবল ভাঙতে পারবে না। আর এই ঘটনার উচিত জবাব দেওয়া হবে।’ আল হুথি বলেন, ‘ওয়াশিংটন ও সৌদি শাসকদের নেতৃত্বাধীন এই হানাদার বাহিনী এমন ধরনের অপরাধ ও তার প্রভাবের জন্য দায়ী’।

এ ঘটনায় সৌদি জোটের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।  

তবে ২০১৪ সালে রাজধানী দখলের পর থেকে এই ঘটনা হুথি বিদ্রোহীদের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইয়েমেন পোস্টের প্রধান সম্পাদক হাকিম আলমাসমারি আল জাজিরাকে বলেন, আর সামাদের মৃত্যু খুবই গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন। তিনি হুথি নিয়ন্ত্রিত এলাকার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট। তাই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই রাজনৈতিকভাবে হুথিদের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা বলে বিবেচনা করা যেতে পারে।

ওই বিমান হামলার স্থানটিকে গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে আলমাসমারি বলেন, ‘হুদাইদাকে হুথিদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান হিসেবে মনে করা হয়। সেখানেই তাদের সব গোয়েন্দা সুবিধা রয়েছে। এটা হুথি ও তাদের নিরাপত্তার জন্য বড় নেতিবাচক দিক’।

২০১৪ সালে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। হুথি ও সালেহ জোট রাজধানী সানা দখল করলে দেশটির প্রেসিডেন্ট হাদি সৌদি আরব নির্বাসনে যান। ২০১৫ সালের মার্চে ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান পরিচালনা শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রতিরোধযোগ্য রোগে মৃত্যু হয়েছে আরও ১০ হাজার মানুষের। গৃহহীন হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। ভয়াবহ বিমান হামলার তাণ্ডবে দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছেন দেশটির সাধারণ মানুষ।