১৬ বছরের এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণে দায়ী প্রমাণিত হয়েছে ভারতের বিতর্কিত ধর্মীয় নেতা ৭৭ বছর বয়সী আসারাম বাপু। বুধবার উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য যোধপুরের কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক মধুসূদন শর্মা তার বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণা করেছেন। দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির অনলাইন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কায় তার বিরুদ্ধে ঘোষিত দণ্ড এখনও সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করা হয়নি। তবে আইন অনুযায়ী তার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন থেকে ন্যূনতম দশ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা ও গুজরাটে আগাম নিরাপত্তা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাপী চারশ’ আশ্রমের মাধ্যমে ধ্যান ও যোগসাধনা শেখাত আসারাম। বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ ভক্ত রয়েছে তার।
যোধপুরের আদালতে ধর্ষণ মামলার বিচারের রায় ঘোষিত হলেও তার বিরুদ্ধে গুজরাটে আরও একটি ধর্ষণ মামলা চলছে। যৌন নিপীড়ন থেকে শিশু-সুরক্ষার (প্রটেকশন অন চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সস) আইনে যোধপুরের আদালতে চলছিল তার বিচারকাজ। পোসকো আইন নামে পরিচিত এই আইনে দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন ন্যূনতম দশ বছরের কারাদণ্ড। এনডিটিভির খবর অনুযায়ী, আসারামের সঙ্গে আরও চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে। নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে খালাস পেয়েছেন অপর দুইজন।
রায় ঘোষণার পর ধর্ষণের শিকার হওয়া মেয়েটির বাবা বলেছেন, আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এই লড়াইয়ে যারা আমাদের সমর্থন দিয়েছেন তাদের প্রত্যেককে আমরা ধন্যবাদ জানাই। এখন আশা করছি সে শক্ত সাজার মুখোমুখি হবে। আসারামের মুখপাত্র নিলাম দুবে বলেছেন, আমাদের আইনি দলের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করে ভবিষ্যতে করণীয় ঠিক করা হবে। বিচারব্যবস্থার ওপর আমাদের আস্থা আছে।
গত বছর ভারতের আরেক কথিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের রায় ঘোষণা হলে ভারতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে নিহত হয় অন্তত ২৩ জন। ওই ঘটনাকে বিবেচনায় নিয়ে আসারামের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ভারতের চারটি রাজ্যে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বুধবারের রায় ঘোষণাকে ঘিরে যোধপুরের কারাগারকে নিরাপত্তা দুর্গের আদলে ঢেলে সাজানো হয়।
ধর্ষণের শিকার মেয়ে ও তার বাবার বাসস্থান উত্তর প্রদেশেও কঠোর নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। আসারামের ভক্ত অধ্যুষিত গুজরাট ও হরিয়ানায়ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।