আইএসের মুখপাত্র আমাকসহ জঙ্গিদের প্রচারণা কাঠামোর বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি সাধনের দাবি করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পুলিশ সংস্থা ইউরোপোল। সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ আটটি দেশের বিভিন্ন সংস্থার এক যৌথ অভিযানে এই সফলতা এসেছে। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
ইউরোপোলের নির্বাহী পরিচালক রব ওয়েইনরাইট এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই যুগান্তকারী অভিযানে আইএসের প্রচারণা কাঠামো এবং ইউরোপের তরুণদের উগ্রবাদী করার প্রচেষ্ঠায় বড় ধরনের ফাটল ধরাতে সমর্থ হয়েছি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দিনের বহুজাতিক ও বহুমাত্রিক অভিযানে আইএসের বহুল প্রচারিত বার্তা সংস্থা আমাক, বয়ান রেডিও, হামুলু ও নাসির নিউজকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়।
বার্তা সংস্থা আমাকের মাধ্যমে জঙ্গিবাদী হামলার দায় স্বীকার ও উগ্র মতবাদ প্রচার করে থাকে আইএস। স্থানীয় পর্যায়ে নিজেদের মতবাদ প্রচারে ব্যবহার হয় বয়না রেডিও, হামুলু ও নাসির নিউজ।
ইউরোপোল জানিয়েছে, বেলজিয়ামের নেতৃত্বে এই অভিযানে বুলগেরিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দল অংশ নিয়েছে। এর লক্ষ্য ছিল আইএসের প্রচারণা কাঠামোকে ব্যাহত করে অনির্দিষ্টকাল ধরে সন্ত্রাসবাদী উপাদান সম্প্রচার ব্যাহত করা।
ফ্রান্স, রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ার পুলিশ বেশকিছু ডিজিটাল প্রমাণ হাতে পাওয়ার পর নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার কর্মকর্তারা আইএসের সার্ভার জব্দ করে। আর ব্রিটেনের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের ইন্টারনেট রেফারেল ইউনিট আইএসের ব্যবহার করা শীর্ষ পর্যায়ের ডোমেইন নিবন্ধককে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
গার্ডিয়ান লিখেছে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল পুলিশ ফোর্সেস আশা করছে উদ্ধার করা তথ্য ব্যবহার করে তারা আইএসের মিডিয়ার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তি, ইউরোপের মাটিতে উগ্রবাদী ও আইএসের সংবাদ সংস্থার নেপথ্যের ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে সক্ষম হবে।
বার্তা সংস্থা আমাককে আইএসের প্রধান মুখপাত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে ইউরোপোল। প্রতিষ্ঠানটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি ২০১৭ সালের জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু করে। বিশ্বব্যাপী নিজেদের কর্মীদের কাছে বার্তা পাঠাতে প্রাথমিক উপকরণ হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়।
২০১৬ সালে প্যারিস, ব্রাসেলস, বার্সেলোনা, বার্লিন হামলায় আইএসের দায় স্বীকারে ব্যবহার হয়েছে আমাক। ইউরোপোলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত বছরের শেষ নাগাদ অন্তত নয়টি ভাষায় আইএসের প্রচারণা অনলাইন সার্ভিসে প্রচারিত হতে থাকে। এর মধ্যে নিউজলেটার মেইল করা, নিয়মিত ব্রাউজকারীদের কাছে অ্যাড-অন এক্সটেনশন দেওয়ার মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিষয়ক নিরাপত্তা কমিশনার জুলিয়ান কিং বেলেন, এই অভিযান প্রমাণ করেছে একযোগে কাজ হলে বিষাক্ত প্রচারণা বন্ধ করে দেওয়া যায়।