অস্ট্রেলিয়ায় এক পরিবারের ৭ জন নিহতের ঘটনায় শোকস্তব্ধ স্বজনরা

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের সাতজনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তাদের আত্মীয়রা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন। মারগারেট রিভার শহরের কাছে একটি গ্রাম্য এলাকায় ক্যাটরিনা মাইলস নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তার পরিবারের সাত সদস্যের মরদেহ গত শুক্রবার উদ্ধার করা নিহতদের মধ্যে ছিলেন ক্যাটরিনা মাইলস ও তার চার সন্তান, ক্যাটরিনার বাবা পিটার ও সিন্ডা মাইলস। পুলিশ বলছে নিহতদের মধ্যে হত্যাকারীও ছিল বলে তাদের ধারণা।ক্যাটরিনা মাইলস ও তার চার সন্তান

পুলিশ কমিশনার ক্রিস ডৌসান বলেন, ওই বাড়ি থেকে শুক্রবার ভোরে এক লোকের ফোন পেয়ে তারা সেখানে হাজির হন।  আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, অন্য কেউ এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত আছে বলে পুলিশ মনে করে না। অন্য কাউকে খুঁজছে না। তিনি জানান, ওই বাড়ি থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পরিবারের এক আত্মীয় বলেছেন, যা ঘটেছে তা আমরা এখনও বুঝে ওঠার চেষ্টা করছি।

পুলিশের মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে ওই পরিবারের আত্মীয়রা স্থানীয়দের এই দুঃখজনক ঘটনার পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনও ধরনের অনুমান না করার আহ্বান জানিয়েছেন।

পুলিশ কমিশনার ডৌসান আরও বলেন, গ্রাম এলাকার বাড়িটির ভেতরে এক নারীর মরদেহ পাওয়া যায়। অন্য নারী ও তার সন্তানের মরদেহ পাওয়া যায় বাড়ির একটি শেডের নিচে। ওই শেডটিকে ঘর বানিয়ে সেখানেই সন্তানদের নিয়ে বাস করতেন ওই নারী। আর সপ্তম ব্যক্তির মরদেহ পাওয়া যায় বাড়ির আঙ্গিনায়। ওই চার সন্তানের বাবাকে হত্যাকাণ্ডের কথা জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ৩৫ বছর বয়সী ক্যাটরিনা মাইলসের চার সন্তানের বয়স আট থেকে ১৩ বছরের মধ্যে।

পার্থ-এর ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অসমিংটন এলাকার বাসিন্দাদের কাছে পরিচিত ছিলেন ৫৮ বছর বয়সী সিন্ডা মাইলস। এলাকাটি জনপ্রিয় পর্যটন স্পট, এছাড়া সেখানে ওয়াইন উৎপাদন হয়।

তাদের প্রতিবেশি ফেলিসিটি হাইয়িন তাদেরকে প্রিয় মানুষ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, তারা সামাজিকভাবে খুবই সচেতন মানুষ ছিলেন। নিরাপদ এলাকা তৈরির জন্য সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়েছেন। আর সেকারণেই তাদের এভাবে চলে যাওয়াটা খুবই কষ্টের।

স্থানীয় কমিউনিটির নেতা পামেলা টাউনশেন্ড ফায়ারফক্স সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, পুরো কমিউনিটিকে নাড়িয়ে দিয়ে গেছে এই ঘটনা। এখানে আমরা প্রতিটি পরিবার একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকি।

১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার পোর্ট আর্থারে এলোপাথাড়ি গুলি চালানোয় ৩৫ জনের প্রানহানির পর এটাকেই সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ওই ঘটনার পর দেশের বন্দুক আইনে সংস্কার আনা হয়। নিষিদ্ধ করা হয় স্বয়ংক্রিয় ও আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। এরপরও ২০১৪ সালেও নিউ সাউথ ওয়েলসে এক পরিবারের পাঁচজনকে হত্যার ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হয় ওই ঘটনায় হত্যাকারী নিজেও নিহত হয়েছিলেন।