উ. কোরিয়া শর্ত মানলে দেশটিতে মার্কিন বিনিয়োগের দ্বার খুলবে: যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত মেনে নিলে দেশটিতে মার্কিন বিনিয়োগের দ্বার খুলবে। সেখানে বিনিয়োগের সুযোগ পাবে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো। রবিবার ‘ফক্স নিউজ সানডে’তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

মাইক পম্পেওমাইক পম্পেও বলেন, উত্তর কোরিয়া যদি তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস করতে সম্মত হয়, তাহলে মার্কিন বেসামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেখানে বিনিয়োগের এ সুযোগ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমেরিকার প্রাইভেট সেক্টরের ব্যবসায়ীরা পিয়ংইয়ং যেতে পারবেন। তারা উত্তর কোরিয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে দেশটিকে সহায়তার সুযোগ পাবেন। এছাড়া সেখানকার অবকাঠামো ও কৃষি খাতেও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যকার আসন্ন বৈঠকের আগে ইরানের সঙ্গে চুক্তি থেকে বের হয়ে আসায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামনের চুক্তিতেও বিষয়টি প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশ্বস্ত কেউ না বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে এমন অবস্থানের কথা জানালেন মাইক পম্পেও।

এদিকে উত্তর কোরিয়ায় মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হলেও ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করা ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বলটন। আমেরিকাসহ ছয় জাতির সঙ্গে তেহরানের পরমাণু চুক্তির পর এ প্রতিষ্ঠানগুলো ইরানে ব্যাপক বিনিয়োগ করে। এখন ট্রাম্প প্রশাসন নিজে চুক্তি থেকে সরে এসে ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরও নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছে।

অন্যদিকে ইউরোপ ‍যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের অর্থনৈতিক পুলিশ হিসেবে মানবে না বলে সতর্ক করেছেন ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লি মাইরে। ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশকে। এমন বাস্তবতায় এ মন্তব্য করেন লি মাইরে। অন্যদিকে, সঙ্গতিপূর্ণ ক্ষতিপূরণ না পেলে ‘যা সমীচীন মনে হবে তাই’ করা হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ইরান।

ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লি মাইরে বলেন, ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিশ্বের অর্থনৈতিক পুলিশ’ হিসেবে মেনে নেবে না। আমরা কি যথেচ্ছভাবে নেওয়া মার্কিন সিদ্ধান্ত মেনে চলার মতো ক্রীতদাস হতে চাই? নাকি আমাদেরও যে অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে সেই কথা বলতে চাই? আমরা ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছি।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বলটন অবশ্য দাবি করেছেন, কোরিয়া সংলাপে ইরান ইস্যু প্রভাব ফেলবে না। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু অস্ত্র চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে চলমান পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ প্রচেষ্টায় কোনও বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।

জন বলটন বলেছেন, ইরান চুক্তি থেকে বের হয়ে আসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে। এতে সবাই বু্ঝে গেছে অসন্তোষজনক কোনও প্রস্তাব ওয়াশিংটন মেনে নেবে না। সূত্র: ফক্স নিউজ, রয়টার্স।