জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের ‘রক্তাক্ত দূতাবাস’ স্থাপিত

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী জেরুজালেমে আজ মার্কিন দূতাবাসের উদ্বোধন করেছেন হোয়াইট হাউসের দুই গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প। বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয় ফিলিস্তিনিদের রক্তস্রোত উপেক্ষা করে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এরইমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৪১ জন। আহতদের সংখ্যা পৌঁছে গেছে দুই হাজারের কাছাকাছি।

জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধন
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের একক রাজধানীর স্বীকৃতি দেন। ইসরায়েলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি। এই নিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ট্রাম্পের ওই বিতর্কিত ঘোষণার পরপরই বিক্ষোভ করতে রাস্তায় নেমে আসেন মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিরা। এ নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভোট হলে মার্কিন স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যানের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১২৮টি দেশ। বিপরীতে ট্রাম্পের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় মাত্র ৯টি দেশ। বিশ্বজুড়ে নিন্দা আর তুমুল প্রতিবাদের মধ্যেও দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার মার্কিন কনস্যুলেট ভবনে দূতাবাস স্থানান্তরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইভাঙ্কা ও জ্যারেড কুশনার ছাড়াও রয়েছেন অর্থ মন্ত্রী স্টিভেন নুচিন ও উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী জন সালভিয়ান।
এমন সময় এই দূতাবাস স্থানান্তরিত হলো যখন ভূমি দিবসের কর্মসূচি পালন করছে ফিলিস্তিনিরা। ৬ সপ্তাহের চলমান কর্মসূচিতে এরইমধ্যে প্রাণ হারিয়েছে... ফিলিস্তিনি। দূতাবাস স্থানান্তরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিনে তাদের মধ্যে আরও বেশি ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকেই গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেন। এই বিক্ষোভে প্রায় লাখ খানেক ফিলিস্তিনি অংশ নেন। স্থানীয় সাংবাদিক মারাম হুমাইদ আল জাজিরাকে বলেন, গত সাত সপ্তাহের বিক্ষোভের চেয়ে এই দিনে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের প্রতিবাদ জানাতে এই বিক্ষোভে অংশ নিতে ফিলিস্তিনের বাসিন্দারা। গাজা উপত্যকা ছাড়াও এদিন প্রতিবাদী বিক্ষোভ হয়েছে পশ্চিম তীরের রামাল্লা ও হেবরন শহরে।

উদ্বোধনকেন্দ্রে যখন উৎসবের আমেজ, বাইরে তখন রক্তগঙ্গা বইছে। প্রতিবাদী বিক্ষোভে প্রাণ হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। এমন বাস্তবতায় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।