জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি নাজিব রাজাক

ওয়ান এমডিবি আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাবেক মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দেশটির দুর্নীতিবিরোধী কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (২২ মে) তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মালয়েশিযার দুর্নীতিবিরোধী কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা খবরটি জানিয়েছে।

নাজিব রাজাক
নির্বাচনের আগেই নাজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রবল হয়ে উঠেছিল মালয়েশিয়ায়। 'ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ' (ওয়ানএমডিবি) নামের সরকারি তহবিল থেকে নিজের ও অনুসারীদের ব্যক্তিগত হিসাবে অর্থ সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। নাজিবের শাসনামলে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ তাকে নির্দোষ ঘোষণা করলেও অন্যান্য দেশ তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে বিরোধী জোটও ক্ষমতায় এলে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্তের প্রতিশ্রুতি দেয়। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ১০ মে শপথ নিয়েই মাহাথিরের নেতৃত্বে বিরোধী জোট ক্ষমতা নিয়েই নাজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেয়। মাহাথির মনে করেন, নতুন করে তদন্ত হলে আত্মসাৎ হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ  উদ্ধার করা যাবে। নাজিবের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

মঙ্গলবার (২২ মে) মালয়েশিয়ার অ্যান্টি করাপশন কমিশন (এমএসিসি) নাজিব রাজাককে তলব করে। পরে এমএসিসি’র প্রধান মোহাম্মদ শুকরি আব্দুল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাকে ডাকা হয়েছে, গ্রেফতারের জন্য নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেহেতু তার জবাবে সন্তুষ্ট, সুতরাং তাকে যেতে পারি। পরবর্তীতে আমাদের যদি আরও বক্তব্যের প্রয়োজন হয় তবে তাকে আবারও ডাকব।’

ওয়ানএমডিবি তহবিলেরই একটি অংশ ছিল এসআরসি। সেখান থেকে কর্মকর্তারা ৪৫০ কোটি ডলার চুরি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নাজিবের শাসনামলে এসআরসি নিয়ে তদন্ত করছিলেন মোহাম্মদ শুকরি। তিনি জানান, ওই তদন্ত বন্ধের জন্য তাকে নানা হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়েছিল।

শুকরি বলেন, ‘আমাকে বরখাস্ত করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল, আগাম অবসরে যেতে বলা হয়েছিল, প্রশিক্ষণ বিভাগে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল।’

সরকারি তদন্তের অংশ হিসেবে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার নাজিবের বিভিন্ন স্থাপনায় অভিযান চালিয়েছে মালয়েশীয় পুলিশ। অভিযানে কয়েক ব্যাগ নগদ অর্থ, গহনা এবং শত শত বিলাসবহুল হাতব্যাগ জব্দ করা হয়েছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলছেন, তদন্তে ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারি নিয়ে যে তথ্য পাওয়া গেছে তা ধারণার চেয়েও গুরুতর। অবশ্য, নাজিব বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।