গাজায় হামাসের ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা

গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন-হামাসের একটি ভূগর্ভস্থ আস্তানা এবং দুইটি সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। বুধবার (২৩ মে) সকালে এ হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে জেরুজালেম পোস্ট খবরটি জানিয়েছে। গাজা উপত্যকা থেকে ‘উদ্ভূত যেকোনও হুমকি’র জন্য হামাসকে দায়ী করে এ হামলা চালানো হয়।

বিমান হামলার প্রতীকী ছবি
ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে ১৯৪৮ সালের ১৫ মে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরায়েল নামের রাষ্ট্র। ১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ইহুদি বসতি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় ছয় ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। পরের বছর থেকেই ৩০ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত পরবর্তী ছয় সপ্তাহকে ভূমি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। এবারের কর্মসূচির শেষ ২ দিনে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ জোরালো হয়ে উঠলে ৬০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। আহত হয় ২৭০০ মুক্তিকামী। নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, সেনাবাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে কয়েকজন ফিলিস্তিনি অগ্নিসংযোগ করার জবাবে হামাসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বুধবার (২৩ মে) হামলা চালানো হয়েছে। তাদের দাবি, মঙ্গলবার সকালে গাজা উপত্যকা থেকে ওই ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে এবং ড্রোন ও ঘুড়ি ব্যবহার করে ইসরায়েলের ক্ষতি করার প্রচেষ্টা চালায়।

হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গাজা উপত্যকায় মাটির উপরে কিংবা মাটির নিচ থেকে উদ্ভূত সব হুমকির জন্য হামাস দায়ী। ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক ও ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে তারা যেসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে তার জন্য পরিণাম ভোগ করতে হবে।’

তবে মাটির নিচে থাকা হামাসের স্থাপনার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করেনি ইসরায়েলি বাহিনী।

২০০৭ সাল থেকে গাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এক সময়ের ফিলিস্তিনি সশস্ত্র মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন হামাস। এরপর থেকেই নিরাপত্তার অজুহাতে উপত্যকাটির ওপর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে মিসর ও ইসরায়েল। এই অবরোধের মুখে গাজার অর্থনীতি ধসে পড়ে। উপত্যকাটি পরিণত হয় পৃথিবীর বৃহ্ত্তম উন্মুক্ত কারাগারে। সরু উপত্যকাটিতে ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস করেন যাদের বেশিরভাগেই ফিলিস্তিনের বিভিন্ন স্থান থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে বিতাড়িত হয়ে আসা শরণার্থী।