আলাদা দেশ হলেও বাংলাদেশ-ভারতের স্বার্থগত সংযোগ রয়েছে: মোদি

বাংলাদেশ ও ভারত দুটি আলাদা দেশ হলেও দুই দেশের স্বার্থগত সংযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার (২৫ মে) বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মোদি এ কথা বলেন।

বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মঞ্চে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি


বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে যোগ দিতে শুক্রবার সকালে শান্তিনিকেতন পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। এদিন বিশ্বভারতীর প্রায় ১০ হাজার স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী এবং এক হাজার পিএইচডি সম্পন্নকারী শিক্ষার্থী তাদের সনদ হাতে পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন।

শুক্রবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মোদি। শুরুতে তিনি বাংলায় বলেন, ‘সকলকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম। শান্তির নীড় কবিগুরুর শান্তিনিকেতনে আমি অত্যন্ত আনন্দ ও শান্তি অনুভব করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মাঝে উপস্থিত আছেন। ভারত ও বাংলাদেশ দুটি আলাদা দেশ, কিন্তু আমাদের স্বার্থগত সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সাংস্কৃতিকভাবে হোক কিংবা সরকারি নীতির দিক দিয়ে হোক, আমরা এক অপরের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখি। বাংলাদেশ ভবন তেমনই একটি দৃষ্টান্ত।’

মোদি জানান, মঞ্চে ওঠার সময় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের কথা তার মনে হচ্ছিলো। তিনি বলেন, ‘যখন মঞ্চের দিকে আসছিলাম, আমি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা স্মরণ করছিলাম। তিনি এখানে মহাত্মা গান্ধী এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সবসময় বিশ্ব নাগরিক হিসেবে স্মরণীয় থাকবেন। আমি যখন তাজিকিস্তান গিয়েছিলাম, তখন সেখানে রবীন্দ্রনাথের একটি ভাস্কর্য উন্মোচনের সুযোগ পেয়েছিলাম। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন, প্রত্যেক ব্যক্তিই জীবনে কিছু করার জন্য জন্মগ্রহণ করেছেন। সঠিক পথের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রদান খুব জরুরি, যেন তারা সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। তিনি বলতেন, শিক্ষা কেবল স্কুল, কলেজেই দিতে হয় না, বরং বিভিন্ন উপায়েই শিক্ষা দেওয়া যায়।’

বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের ডিগ্রি আপনাদের মেধাকেই প্রতিফলিত করছে।’

সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ভবন-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এই ভবনে রয়েছে আধুনিক থিয়েটার, প্রদর্শনী কক্ষ, বিশাল লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরিতে রয়েছে সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাস এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক সম্পর্কিত গ্রন্থ। এছাড়া, ভবনের প্রবেশদ্বারের দুই প্রান্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মুর‌্যাল স্থাপন করা হয়েছে।