পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

আগামী ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। শনিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট মামনুন হোসেন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তাবিত এ তারিখটি অনুমোদন করেছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা খবরটি জানিয়েছে।

নির্বাচনের প্রতীকী ছবি
পাকিস্তানে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছিলো ২০১৩ সালে। তখন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিলো। দলটির নেতা নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু গত বছরের জুলাইয়ে সম্পদের হিসাব আড়াল করার অভিযোগে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করে শাহিদ খাকান আব্বাসি।

আগামী ৩১ মে বর্তমান সরকার ও জাতীয় পরিষদের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্বগ্রহণ করবে এবং নির্বাচন আয়োজন করবে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে শাহিদ খাকান আব্বাসি এবং বিরোধী নেতা খুরশিদ শাহ এখনও একমত হতে পারেননি।

গত সপ্তাহের প্রথমদিকে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচন ২৫ জুলাই থেকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে কোনও একটি তারিখে অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দিয়ে একটি নথি প্রেসিডেন্ট মামনুনের কাছে পাঠিয়েছিল। শনিবার সে প্রস্তাব থেকে নির্বাচনের জন্য ২৫ জুলাই তারিখটিকে অনুমোদন দেন প্রেসিডেন্ট।

পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ মিলিয়ে ১‌০ কোটিরও বেশি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। নির্বাচনে মূল লড়াইটা পিএমএল-এন এবং ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফের মধ্যে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

উল্লেখ্য,২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল দুনিয়ার প্রভাবশালী রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং রাঘববোয়ালদের আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করে সাড়া ফেলে দেয় আলোচিত ‘পানামা পেপারস’। ফাঁস হওয়া ওই গোপন নথিতে অর্থ পাচারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছেলের নাম উঠে আসায় নিজ দেশে চাপের মুখে পড়েন তিনি। বিরোধী দলগুলো থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়। ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর নওয়াজ শরিফ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশে অবৈধ বিনিয়োগের অভিযোগ তদন্তে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। পানামা পেপারস প্রকাশের পর বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), জামায়াতে ইসলামিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত দেয় আদালত। ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই পানামা পেপারস কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার পর পদত্যাগ করেন নওয়াজ শরিফ। এ বছরের ১৩ এপ্রিল সর্বোচ্চ আদালতের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে জারি করা এক রুলে জানায়,পাকিস্তানে সংবিধানের ৬২ (১) (এফ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেউ অযোগ্য ঘোষিত হলে তাকে আজীবনের জন্য অযোগ্য বিবেচনা করতে হবে। আর এর মধ্য দিয়ে আজীবনের জন্য সরকারি কার্যালয়ে নিষিদ্ধ হলেন নওয়াজ।