গর্ভপাতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পক্ষে রায় দিলো আয়ারল্যান্ডের জনগণ

গর্ভপাতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে আয়ারল্যান্ডের জনগণ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (২৫ মে) অনুষ্ঠিত গণভোটে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষে ৬৬.৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। আর গর্ভপাত বহাল রাখার পক্ষে ভোট পড়েছে ৩৩.৬ শতাংশ। আয়ারল্যান্ডের স্থানীয় সময় শনিবার (২৬ মে) সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে ডাবলিন ক্যাসেলে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এর আগে বুথফেরত জরিপেও একইরকম ফলাফলের আভাস দেওয়া হয়েছিল।

আইরিশ জনগণের উচ্ছ্বাস
আয়ারল্যান্ডে গর্ভপাত আইনত নিষিদ্ধ। ১৯৮৩ সালে গণভোটের মাধ্যমে গর্ভপাতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অষ্টম সাংবিধানিক সংশোধনী পাস হয় সেদেশে। অষ্টম সাংবিধান সংশোধনী অনুযায়ী, গর্ভস্থ শিশু এবং মায়ের জীবনের সমানাধিকার রয়েছে। সে দেশে গর্ভপাত করালে ১৪ বছর জেল এবং জরিমানার বিধান রয়েছে।

বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে, আইনি জটিলতার ভয়ে গর্ভস্থ ভ্রুণ নষ্ট হওয়ার পরও গর্ভপাত করাতে রাজি হয়নি সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল। যার জেরে অনেকক্ষেত্রেই প্রাণহানি হয়েছে মায়ের। যেমন- ২০১২ সালে ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক সবিতা হলপ্পনাবার অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন শারীরিক জটিলতা শুরু হয়। গর্ভপাত করানো জরুরি হয়ে পড়ে। কিন্তু হাসপাতাল সে পথে হাঁটেনি। ১৭ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা সবিতার গর্ভপাত না-করানোয় মৃত্যু হয় তার। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ১২ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে গর্ভপাত করানোর অনুমতি দিক সরকার। এমনকি শরীর সুস্থ থাকলে ২৪ সপ্তাহ পর্যন্তও গর্ভপাত করানোর অনুমতি দাবি করেন তরা। এরপর চাপে পড়েই গণভোটের আয়োজন করে সরকার। শনিবার গণভোটের ফলাফলে দেখা যায়, গর্ভপাত আইনকে আমূল পরিবর্তনের পক্ষে বিপুল ভোট পড়েছে। 

আয়ার‍ল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার গর্ভপাতের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলে। শনিবার ফলাফল ঘোষণার পর একে আয়ারল্যান্ডের জন্য ‘ঐতিহাসিক দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ‘নীরব বিপ্লব’ হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। এর আগে ২০১৫ সালে সমলিঙ্গের বিয়ে বৈধ ঘোষণার পক্ষে রায় দিয়েছিল আয়ারল্যান্ডের জনগণ।