কাশ্মিরের চেহারা ও ভাগ্যের বদল ঘটবে: রাজনাথ সিং

কাশ্মিরের প্রতি নরেন্দ্র মোদি সরকারের ‘প্রচণ্ডরকমের ভালোবাসা’ রয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। বৃহস্পতিবার (৭ জুন) রাজ্যের শ্রীনগর এলাকা সফরে গিয়ে তিনি বলেন, কাশ্মিরে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছে এনডিএ সরকার। রাজনাথ বলেন, সরকার কাশ্মিরের চেহারা ও ভাগ্য বদলে দেবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।

রাজনাথ সিং
দুইদিনের সফরে বৃহস্পতিবার শ্রীনগরে পৌঁছান রাজনাথ। এদিন শ্রীনগরে পিপল’স ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)’র যুব সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। জানান, দেশের বাকি অংশের সঙ্গে যেন জম্মু-কাশ্মির এগিয়ে যেতে পারে, তার জন্য বাড়তি উদ্যোগ নেবে কেন্দ্র।

রাজনাথ সিং বলেন, কাশ্মিরের জন্য নরেন্দ্র মোদি সরকারের অনেক ভালোবাসা আছে। আমরা জম্মু-কাশ্মিরের চেহারা ও ভাগ্যের বদল ঘটাবো...আপনাদের সবাইকে আমি আশস্ত করছি। আমি আশ্বস্ত করছি যে আমাদের সাধ্যমতো সবকিছু করব। আপনাদের আরও নিশ্চিত করতে চাই যে, জম্মু-কাশ্মিরের ভাই-বোনদের অগ্রগতি দেশের অন্য সবার মতো করেই হবে।’

রাজনাথ বলেন, ক্রীড়াক্ষেত্রে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার যে সব সুযোগসুবিধা দিয়েছে, সেগুলি গ্রহণ করলে উপত্যকার কমবয়সীদের ভাগ্য পাল্টাবেই। তিনি বলেন, ‘রাজ্যের অনেক তরুণই গত কয়েক বছরে অন্ধকারে হারিয়ে গেছে। আমরা তাদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য সুযোগসুবিধা দিচ্ছি। এ রাজ্যে ক্রীড়াপ্রতিভা অনেক। তারা যদি ক্রীড়া এবং শিক্ষা ক্ষেত্রের বিভিন্ন সুযোগসুবিধা গ্রহণ করে তা হলে তাদের ভাগ্য বদলাবেই।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, সীমান্ত এলাকায় লাগাতার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে কাশ্মিরের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে রাজনাথ সিং এর বৈঠক করার কথা রয়েছে। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ফল কী হল তা বোঝাই এই সফরের লক্ষ্য।

উল্লেখ্য,কাশ্মিরে সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর কেউ কেউ সরাসরি স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত। কেউ কেউ আবার কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে। ইতিহাস পরিক্রমায় ক্রমেই সেখানকার স্বাধীনতা আন্দোলনের ইসলামিকীকরণ হয়েছে। এখন সেখানকার বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর মধ্যে হিজবুল মুজাহিদীন সবচেয়ে সক্রিয়। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাশ্মিরের জাতিমুক্তি আন্দোলনকে বিভিন্ন জঙ্গিবাদী তৎপরতার থেকে আলাদা করে শনাক্ত করে না। সন্দেহভাজন জঙ্গি নাম দিয়ে বহু বিদ্রোহীর পাশাপাশি বেসামরিকদের হত্যার অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। কাশ্মিরে পাকিস্তানপন্থীদের তৎপরতা থাকলেও সেখানে সরাসরি কাশ্মিরের স্বাধীনতার দাবিতে লড়াইকারীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। কাশ্মির প্রশ্নে সমগ্র ভারতীয় স্টাবলিশমেন্টের দৃষ্টিভঙ্গিতেই সেখানকার সমস্যাকে ‘বিচ্ছিন্নতা আর জঙ্গিবাদের’ সমস্যা আকারে দেখা হয়ে থাকে। বিপরীতে কাশ্মিরিদের কাছে সেখানকার লড়াই আদতে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণের লড়াই। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সরকারি বাহিনীর নিরাপত্তা অভিযানে বিদ্রোহী ও বেসামরিক নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে কাশ্মিরে উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা গেছে।