ট্রাম্প-কিম বৈঠক: দুই কোটি ডলার খরচ করছে সিঙ্গাপুর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের বৈঠক আয়োজনের জন্য সিঙ্গাপুর দুই কোটি ডলার খরচ করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লী সেইন লুং। এ বৈঠক আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সিঙ্গাপুরের ভাবমূর্তি বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। তার মতে, এর মধ্য দিয়ে সিঙ্গাপুরের প্রচার হচ্ছে। ১২ জুন ট্রাম্প ও কিমের বৈঠককে সামনে রেখে ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লী সেইন লুং এসব কথা বলেন।

কিম, লী, ট্রাম্প
আগামী ১২ জুন সিঙ্গাপুরের সান্টোস দ্বীপে ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হবেন কিম ও ট্রাম্প। অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এবং সুবিধাজনক স্থান বিবেচনায় বৈঠকের স্থান হিসেবে সিঙ্গাপুরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে সিঙ্গাপুরে একইসঙ্গে উত্তর কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস রয়েছে। 

রবিবার (১০ জুন) সকালে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী সেন্টোসায় মোতায়েনকৃত সিঙ্গাপুর আর্মড ফোর্সেস-এর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পুলিশ সদর দফতরে হোম টিম কমান্ডও পরিদর্শন করেন তিনি। পরে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেসময় ট্রাম্প ও কিমের বৈঠক আয়োজনের জন্য সিঙ্গাপুর দুই কোটি ডলার খরচ করছে বলে নিশ্চিত করেন লী। এতো পরিমাণ অর্থ খরচ নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা স্বেচ্ছায় খরচ করছি এবং এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা ভূমিকা রাখছি; আমাদের গভীর আগ্রহ থেকেই তা করা হচ্ছে।’

লী সেইন বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, আমাদের দেশকেই বৈঠক আয়োজনের স্থল হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে, আমরা নিজে থেকে তাদেরকে ডাকিনি। এর মধ্য দিয়েই বোঝা যায় তাদের সঙ্গে সিঙ্গাপুরের সম্পর্কটা কী....এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানটা কেমন।’

লী মনে করেন সিঙ্গাপুরের দৃষ্টিকোণ থেকে বৈঠক হওয়াটাই জরুরি এবং আঞ্চলিত স্থিতিশীলতা রক্ষায় এর থেকে ইতিবাচক ফলাফল আসাটাও প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘যখন দুই পক্ষ আমাদেরকে বৈঠকের আয়োজক হতে বললো, তখন আমরা না করতে পারলাম না। আমাদেরকে উঠে দাঁড়াতে হবে এবং আমরা তা পারব। এক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতা রয়েছে, এখানে আমাদের কিছু সম্পদ বিনিয়োগ করতে হয়েছে, কিন্তু আমরা ভালো করতে পারব।’

মঙ্গলবার ট্রাম্প ও কিমের বৈঠককে কেন্দ্র করে নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে লী বলেন, তারা (এসএএফ, পুলিশ, এমসিআই) ভালো করছে। কেবল আলাদা আলাদা নয়, বরং একত্রিত হয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতেও কাজ করছে তারা। আগামী কয়েকদিনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তারা সবাই প্রস্তুত।’

১২ জুন সিঙ্গাপুরে বৈঠকের তারিখটি বেশ কিছুদিন আগে নির্ধারিত হলেও আচমকা গত ২৪ মে উনের সঙ্গে বৈঠকটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে উত্তর কোরিয়াসহ আন্তর্জাতিক বিশ্ব হতাশা প্রকাশ করেছিল। এরপর ২৫ মে ট্রাম্প নতুন করে ইঙ্গিত দেন, ১২ জুন তারিখেই সিঙ্গাপুরে কিমের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে। ২৬ মে সংবাদ সম্মেলনেও এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। একই দিনে আকস্মিক বৈঠক করেন উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতারা। ২৭ মে সকালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন বলেন,উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন।