‘সমঝোতার গুরুত্বপূর্ণ নথি’ স্বাক্ষর ট্রাম্প-কিমের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন পারস্পরিক সমঝোতার এক গুরুত্বপূর্ণ নথিতে স্বাক্ষর করেছেন। তবে এর বিস্তারিত এখনও জানানো হয়নি। প্রথম পর্বের একান্ত বৈঠকের পর ট্রাম্প নিজেই সাংবাদিকদের ঐতিহাসিক সমঝোতার আভাস দিয়েছিলেন। সিএনএন প্রথমে সেই সমঝোতামূলক নথি স্বাক্ষরের খবর জানায়। পরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম খবরটি নিশ্চিত করে।

ffc20e8b-8ba2-4aab-8988-74368846df96১২ জুন, মঙ্গলবার সকালে কিমের সঙ্গে ৩৫ মিনিটের একান্ত বৈঠক শেষে দ্বিতীয় পর্বে দুই দেশের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন তারা। বৈঠক শেষে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে তার দেশ। ঐতিহাসিক বৈঠকের সাফল্য ও উন্নতিকে ধরে রাখতেই দুই নেতা এই চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন বলে জানান একজন মার্কিন কর্মকর্তাও। সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট আগে এই চুক্তির বিস্তারিত কিছু বলতে চাচ্ছেন না। দিনের শুরুতে দুই নেতার মধ্যে কোনও চুক্তির আগাম আভাস পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় দুপুরের খাবারের পর দীর্ঘ সময় কোনও কর্মসূচি ছিল না। সেই বিরতির একপর্যায়ে কিছু সময় কিমের সঙ্গে হোটেলের আঙিনায় হাঁটেন ট্রাম্প। সে সময় তিনি ঘোষণা দেন, দুপুরের পর একটি নথি সই হতে পারে।

ট্রাম্পের সঙ্গে হাঁটার সময় কিমকে প্রেসিডেন্টের লিমুজিন গাড়ির ভেতরটা দেখতে দেওয়া হয়। টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীরা ‘বিস্ট’ নামের গাড়ি দেখান। কিছুক্ষণ বাদে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি নথি সই করছি। একটি দুর্দান্ত বিস্তারিত দলিল।’ এতে কী আছে, তা পৃথক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হবে। এটি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। সমঝোতা স্বাক্ষরের প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম বলেছেন, বৈঠক আয়োজন করার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চান তিনি। অনুবাদকের সাহায্য কিম বলেন, ‘ঐতিহাসিক এক বৈঠক হয়েছে। অতীতকে পেছনে ঠেলে ঐতিহাসিক একটি নথিতে সই করতে যাচ্ছি।’ বিশ্ববাসীর চাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাপক একটি পরিবর্তন দেখবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, নথিতে সইয়ের অর্থ দাঁড়ায় আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে এবং এর গতি বজায় থাকবে।

বৈঠক শুরুর আগে থেকেই ট্রাম্প বলেছিলেন, এটা দুর্দান্ত বৈঠক হবে। আর কিম বলেন, ‘এমন অবস্থায় আসা সহজ ছিল না।’ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শান্তি জন্য বড় এক ঘটনা ছিল আজকের দিনটি। দুই নেতার একান্ত বৈঠকের পর এখন দ্বিতীয় পর্বের বৈঠকে তাদের সঙ্গে মিলিত হন দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এর আয়োজনে মূল ভূমিকা পালনকারী দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন। মুন বলেছেন, ‘গত রাতে ঘুমাতে পারিনি।’ কেবিনেটের এক বৈঠকে মুন বলেন, ‘আশা করি বৈঠক সফল হবে এবং নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হবে।’ এর আগে সব জল্পনা-কল্পনা ও অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে সেন্টাসা দ্বীপে বৈঠক শুরু করেন দুই নেতা। প্রথমেই দুই দেশের পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে হাত মেলান ট্রাম্প-কিম। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, বৈঠক শুরুর আগে ১২ সেকেন্ড সময় ধরে করমর্দন করেন তারা।