হুদায়দাহ বিমানবন্দর দখলের দাবি সৌদি জোটের

কয়েকদিনের তুমুল যুদ্ধের পর ইয়েমেনের বৃহত্তম বন্দরনগরী হুদায়দাহ দখল করেছে বলে দাবি করেছে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। শহরটির বিমানবন্দরকে নিয়েই মূলত লড়াই চলছিলো। হুথি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে সেটি দখলে সমর্থ হয়েছে বলে বুধবার সকালে ঘোষণা দেয় তারা।

4bpq5a65c5c017171u1_800C450

ইয়েমেনের প্রধান সমুদ্র বন্দরের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে হুথি বিদ্রোহীদের সময় বেঁধে দিয়েছিল আরব আমিরাত। বেঁধে দেওয়া সময় পার হওয়ার পর বুধবার ‘গোল্ডেন ভিক্টরি’ নামে অভিযান শুরু করে সৌদি জোট। লোহিত সাগরে অবস্থিত বন্দরটি ইয়েমেনের যোগাযোগের  প্রধান পথ। বন্দরটি দিয়ে মানবিক সংকটে থাকা ইয়েমেনের ৮০ শতাংশ প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা হয়। জাতিসংঘের মতে, ইয়েমেনে এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানবিক সংকট চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে,দেশটির প্রায় ৮৪ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষ-পূর্ব অবস্থায় আছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে হুদায়দাহ বন্দরে হামলা না চালানোর জন্য বিবাদমান গ্রুপগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি করার চেষ্টা করা হয়েছে। সংস্থাটি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, বন্দরটি আক্রান্ত হলে লাখ লাখ ইয়েমেনির জন্য খাবার,জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে সেখানে মহামারী আকারে কলেরা দেখা দিয়েছে

সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার আব্দুস সালাম আশ-শেহি বুধবার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, হুদায়দা বিমানবন্দর সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে এবং এটা এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।

হুদায়দাহ সমুদ্রবন্দর থেকে হুদায়দা বিমানবন্দরের অবস্থান মাত্র আট কিলোমিটার দূরে। হুদায়দা সমুদ্রবন্দর দিয়ে দুই-তৃতীয়াংশ আমদানি পণ্য ইয়েমেনে প্রবেশ করে থাকে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে যে সামান্য কিছু ত্রাণ সহায়তা ইয়েমেনে আসে তাও এ বন্দর দিয়েই আসে। হুদায়দাহ বন্দর নগরীতে আনুমানিক ৬ লাখ মানুষ বাস করেন। সেখানে বড় ধরনের যুদ্ধ হলে আড়াই লাখের মতো মানুষের মৃত্যু হতে পারে। একই সঙ্গে লাখ লাখ মানুষের খাবারসহ অন্যান্য সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে।

২০১৫ সালে ইয়েমেনে হস্তক্ষেপের পর এটাই সৌদি জোটের সঙ্গে হুথিদের সবচেয়ে বড় লড়াই। হুথিদের সব ধরনের সুবিধা বন্ধ করে দিয়ে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনার জন্যই বন্দরটিতে হামলা চালিয়েছে জোট। জঙ্গিবিমান ও জাহাজের পাশাপাশি আরব আমিরাত সমর্থিত ইয়েমেনি বাহিনী, লোহিত সাগরের উপকূলীয় অঞ্চলের স্থানীয় দলগুলোর পাশাপাশি হুথিদের হাতে নিহত দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহর ভাতিজার নেতৃত্বাধীন একটি ব্যাটেলিয়ন জোটের পক্ষে এই অভিযানে অংশ নিয়েছে।