সৌদি আরব থেকে সেনা প্রত্যাহার করছে মালয়েশিয়া!

সৌদি আরবে মোতায়েন মালয়েশীয় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহারের কথা বিবেচনা করছে কুয়ালা লামপুর। বুধবার মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ সাবু এ ঘোষণা দিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সৌদিতে মোতায়েন তার দেশের সেনারা ইয়েমেন যুদ্ধে বা দায়েশ (আইএস)-এর বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নেয়নি।

nonameপ্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ সাবু বলেন, মালয়েশিয়া সবসময় নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করেছে। এখানে বিশ্বের প্রধান কোনও শক্তির রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতি আনুকূল্য নেই। কুয়ালা লামপুর জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম)-এর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে। এ জোটের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছে মালয়েশিয়া।

মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে সৌদি আরবের দীর্ঘ প্রভাব রয়েছে। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ২০১৩ সালের নির্বাচনে জিতিয়ে আনতে ৬৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার দিয়েছিল সৌদি আরব। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ৭৫৫ কোটি ৫২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫০ টাকা। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে মালয়েশিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল মোহামেদ আপানদি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এই অর্থ ছিল মূলত সৌদি অনুদান।

মূলত মালয়েশিয়ায় মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রভাব ঠেকাতেই নাজিব রাজাককে এই অর্থ দিয়েছিল সৌদি আরব। তৎকালীন সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ অর্থ প্রদানের বিষয়টি অনুমোদন করেছিলেন।

মালয়েশিয়ার বৃহত্তম ইসলামপন্থী দল প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি (পিএএস)। এ দলটির উদ্যোক্তারা মুসলিম ব্রাদারহুডের দর্শন দ্বারা অনুপ্রাণিত। ফলে যে কোনওভাবে পিএএস-এর প্রভাব কমাতে নাজিব রাজাকের দ্বারস্থ হয় সৌদি সরকার। তবে মালয়েশিয়ার গত নির্বাচনে নাজিব রাজাকের দল পরাজিত হয়। আনোয়ার ইব্রাহিমের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোটের প্রধানমন্ত্রী হন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার মাহাথির মোহাম্মদ। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের চার মাসেরও কম সময়ের মাথায় সৌদি আরব থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা এলো।