সৌদি আরবের সঙ্গে হাইফা বন্দরের রেল যোগাযোগের পরিকল্পনা ইসরায়েলের

ইসরায়েলের হাইফা সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় অন্যান্য আরব দেশের রেলপথ চালু করতে চায় ইসরায়েল। এর মাধ্যমে দেশটি ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক যোগাযোগ বাড়াতে চায়। এই সপ্তাহেই এক বৈঠকে ইতোমধ্যে ‘আঞ্চলিক শান্তির রেলপথ’ নামে এই প্রকল্প শুরুর ব্যাপারে একমত হন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও যোগাযোগমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হাদাসোটের বরাত দিয়ে আরেক ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এই খবর জানিয়েছে।

F101003MS02

ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বাড়ানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের হাইফা সমুদ্র বন্দরকে জর্ডানের রেল যোগাযোগের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। পরে সেখান থেকে তা সৌদি আরবসহ অন্যান্য সুন্নি আরব দেশগুলোর রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে।

টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়, আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এই রেলপথ নির্মাণ করতে চায় ইসরায়েল। এই সপ্তাহে এক বৈঠকে কাটজ ও নেতানিয়াহু প্রকল্পটির বিস্তারিত বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছান। তারপর তারা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পরামর্শ করে পরিকল্পনাটি এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।

নেতানিয়াহু ও কাটজের দফতর থেকে প্রকাশিত প্রচারণামূলক ভিডিওতে দেখানো হয়, এই প্রকল্পের আওতায় হাইফা-বেইত শিয়ান রেললাইনকে জর্ডান সীমান্ত পর্যন্ত বাড়ানো হবে। পথে জেনিনে একটি স্টেশনও রাখা হবে। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদেরও রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত সিরিয়াকে এড়িয়ে ইউরোপ থেকে হাইফায় পণ্য আনা-নেওয়া করা যাবে।

গত এপ্রিল মাসে প্রকল্পটির কথা বলতে গিয়ে ইসরায়েলের যোগাযোগমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছিলেন, এই প্রকল্পের দুটি প্রধান অংশ রয়েছে। প্রথমত ইউরোপ থেকে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও জর্ডানের মধ্যে ইসরায়েল স্থলসেতু হিসেবে কাজ করবে। আর জর্ডান হলো আঞ্চলিক যোগাযোগের প্রধানকেন্দ্র। এখান থেকে ইসরায়েল ও পশ্চিমে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে রেলযোগাযোগ স্থাপন করা হবে। অন্যদিকে সৌদি আরব ও উপসাগরীয় দেশগুলোর পাশাপাশি পূর্বে ইরাক পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। একই সঙ্গে আকাবা ও এইলাতের মাধ্যমে দক্ষিণে লোহিত সাগর পর্যন্তও রেল যোগাযোগ করতে পারবে ইসরায়েল।

কাটজ দাবি করেন, ইসরায়েল, জর্ডান ও ফিলিস্তিনের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি এই উদ্যোগ ইসরায়েলকে এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে সংযুক্ত করবে। প্রকল্পটি এই অঞ্চলের শাসন ব্যবস্থাকেও দৃঢ় করবে।

প্রচারণা ভিডিওতে বলা হয়, অল্প সময়ের মধ্যেই এই প্রকল্পের আওতায় ইসরায়েল, সৌদি আরব ও উপসাগরীয় অঞ্চলের বিদ্যমান যোগাযোগ অবাকাঠামোকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সহযোগিতা দেবে বলে আশা করছে ইসরায়েল। বিষয়ে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানার জন্য টাইমস অব ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গত এপ্রিলে যোগাযোগ করা হয়। ওই সময় একজন কর্মকর্তা বলেছিলেন, প্রস্তাবটি ‘আকর্ষণীয়’। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি নিয়ে তখনও কোনও অবস্থান নেয়নি।