ওপেককে অপমান করেছেন ট্রাম্প: ইরান

তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের নীতি পরিবর্তনের বিষয়ে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সংস্থাটিকে অপমান করেছেন বলে অভিযোগ করেছে ইরান। দেশটির তেলমন্ত্রী বিজান জাঙ্গানেহ বলেছেন, ‘ওপেকের ভিত্তি ও নীতিমালা হচ্ছে যে, তেলের বাজারে রাজনীতি থাকবে না। রাজনৈতিক ইস্যু তেলের বাজারকে স্পর্শ করবে না। এতে করে চূড়ান্তভাবে সরবরাহ ও চাহিদাই তেলের দাম ঠিক করতে পারে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক পদক্ষেপ ও অস্থিতিশীলতা তেলের বাজারে উদ্বেগ তৈরি করেছে এবং তেলের দাম বাড়িয়ে তুলেছে। এর মধ্যে ওপেকের কিছু সদস্য দেশের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অপমানজনক নির্দেশ রয়েছে; যা ওই সব দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি অপমান।’

nonameইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিজান জাঙ্গানেহ বলেন, তেল উত্তোলন বাড়ানোর বিষয়ে রফতানিকারক দেশগুলোর জন্য ট্রাম্পের নির্দেশ খুবই অপমানজনক। এ অপমান এসব দেশের জনগণেরও। ট্রাম্পের কারণে তেলের বাজার অস্থির হয়ে উঠবে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প ওপেককে এখনই তেলের দাম কমানোর কথা বলেন। ট্রাম্প বলেন, ওপেকের মনে রাখা উচিত যে, গ্যাসের দাম অনেক বেশি এবং তারা কোনও সহযোগিতা করছে না। যদি কিছু তারা করে থাকে তা হচ্ছে দাম বাড়াচ্ছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্র ওপেকের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে প্রতিরক্ষা দিচ্ছে বিনামূল্যে। লেনদেন দ্বিপাক্ষিক হওয়া উচিত। এখনই তেলের দাম কমাও।

এর আগে গত শনিবার ট্রাম্প জানান, তিনি সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাকে বলেছেন ইরান ও ভেনেজুয়েলার কারণে সৌদি আরবের তেলের উৎপাদন দিনে আরও ২০ লাখ ব্যারেল বাড়ানো প্রয়োজন। ট্রাম্প জানান, সৌদি বাদশাহ তার সঙ্গে একমত হয়েছেন।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ উভয় রাষ্ট্রনেতার ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, তেলের বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষা পদক্ষেপ প্রয়োজনের বিষয়ে তারা কথা বলেছেন। এসপিএ তেলের উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে সম্মতির কথা উল্লেখ করেনি। পরে হোয়াইট হাউসও ট্রাম্পের দাবি থেকে কিছুটা সরে আসে। এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সৌদি বাদশাহ আশ্বস্ত করেছেন প্রতিদিন অতিরিক্ত ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে রিয়াদের। তবে তা প্রয়োজনে এবং ওপেক ও ওপেক বহির্ভূত মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজে লাগানো হবে।

২০১৬ সালে ওপেক সদস্য ও বৃহত্তম তেল উৎপাদকরা প্রতিদিন তেলের উৎপাদন ১৮ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনতে সমঝোতায় পৌঁছে। গত সপ্তাহে ওপেক দেশগুলো প্রতিদিন উৎপাদন ১০ লাখ ব্যারেল বাড়াতে সম্মত হয়। সূত্র: আল জাজিরা, পার্স টুডে।