রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের খবর প্রকাশকারী দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানোর ঘটনায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরিকারী রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে উপনিবেশিক আমলের দাফতরিক গোপনীয়তা আইনে অভিযোগ গঠন দেশটির এক আদালত। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের গোপন নথি সংগ্রহ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় ৬ মাসের প্রাথমিক শুনানি শেষে সংবাদমাধ্যমে স্বাধীনতা বিষয়ক আলোচিত এই মামলাটির বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে।

মিয়ানমারে গ্রেফতার রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়া লোন

গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে রাখাইনের উত্তরাঞ্চলীয় গ্রাম ইনদিনে সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীরা ১০ রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা করে। তাদের রাখা হয় গণকবরে। ঘটনার সরেজমিন অনুসন্ধানে নেমেছিলেন রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন এবং কিয়াও সোয়ে ও। ডিসেম্বরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এরপর অভিযোগ আনা হয় দাফতরিক গোপনীয়তা ভঙ্গের আইনে। ফেব্রুয়ারিতে কর্তৃপক্ষ রয়টার্সকে জানায়,ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তবে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে রয়টার্সের সাংবাদিকদের দাফতরিক গোপনীয়তা ভঙ্গের সঙ্গে ওই তদন্ত সম্পর্কহীন বলে দাবি করা হয়। সেই তদন্তের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত ৭ সেনাকে এ মাসেই ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

রয়টার্সের সাংবাদিক কিয়াও সোয়ি উ

ইয়াঙ্গুনের জেলা জজ ইয়ে লিউিইন রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ি উ’র বিরুদ্ধে দাফতরিক গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন। অপরাধ প্রমাণ হলে তাদের ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। ওই অভিযুক্ত সাংবাদিকরা প্রথম থেকে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতকে বলেছেন, তারা সাংবাদিকতার নৈতিকতা মেনেই কাজ করেছেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন, বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ, জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারাও রয়টার্স সাংবাদিকদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।