ছয় মাসে তিন হাজার ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে ইসরায়েল

২০১৮ সালের প্রথম ছয় মাসে তিন হাজার ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে ইসরায়েল। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৪৯৭ শিশু এবং ৮৪ জন নারীও রয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি কারাগারে মৃত্যু হয়েছে চার ফিলিস্তিনির। কুদস প্রেসের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর।

nonameপ্যালেস্টাইনিয়ান প্রিজনার্স সেন্টার ফর স্টাডিজ-এর হিসাব অনুযায়ী, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর শিশুদের গ্রেফতারের ঘটনা বেড়েছে ৩০ শতাংশ। ২০১৭ সালের প্রথম ছয় মাসে ৩৮০ ফিলিস্তিনি শিশুকে গ্রেফতার করে ইসরায়েল।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গ্রেফতারকৃত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শুধু গাজা উপত্যকা থেকেই ১২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে; যাদের বেশিরভাগই জেলে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ইসরায়েলের কারাগারগুলোতে বন্দি রয়েছেন সাড়ে ছয় হাজার ফিলিস্তিনি। এরমধ্যে ৫৪ নারী এবং ৩৫০ শিশুও রয়েছে। এক হাজার রোগীও রয়েছেন বন্দিদের তালিকায়।

এদিকে ইসরায়েলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী অফির আকুনিস বলেছেন, ইসরায়েল কর্তৃক দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে কোনও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গ্রহণযোগ্য নয়। ট্রাম্প প্রশাসন এটা বুঝতে পারছে, একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা আরব-ইসরায়েল সংঘাতের সমাধান করবে না। মার্কিন প্রশাসনে অনেকেই বিষয়টি অনুধাবন করছেন।

ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন দল লিকুদ পার্টির এই নেতা বলেন, ইহুদিদের কেন্দ্রস্থল পশ্চিম তীরের সামারিয়া ও জুডেয়াতে একটি ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, একটি ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হচ্ছে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য একটি আত্মহত্যার রেসিপি। আমরা আত্মহননের প্রতিজ্ঞা করছি না। যারাই একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের অস্তিত্বকে বিনাশ করতে চায় তারাই দুই রাষ্ট্রভিত্তিক ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন জানাবে।

অন্যদিকে মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার প্রধান রসদ সরবরাহ ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। কারাম আবু সালেম নামের এই কমার্শিয়াল বর্ডার ক্রসিং দিয়ে কার্গোতে করে গাজার বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হতো। ১০ জুলাই ২০১৮ মঙ্গলবার এটি বন্ধ করে দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। আর এর পক্ষে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানো হয়, ইসরায়েল কর্তৃক দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের অগ্নিসংযোগ ও অনুপ্রবেশের চেষ্টা। তেল আবিব বলছে, এমন কর্মকাণ্ডের বদলা বা প্রতিশোধ হিসেবেই রসদ সরবরাহ ক্রসিংটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

গাজা উপত্যকার ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দার জন্য বৈদেশিক সহায়তা ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠাতে কারাম আবু সালেম নামের এই সীমান্ত ক্রসিংটি ব্যবহার করা হয়। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন থেকে ক্রসিংটি দিয়ে শুধু খাবার ও ঔষধের মতো মানবিক সামগ্রী সরবরাহের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে পোশাক ও নির্মাণ সামগ্রী প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে না।